ট্রাফিক পুলিশের টেন্ডল থেকে রাতারাতি অনলাইন টিভি’র চেয়ারম্যান
আরজুন নাহারঃ
চট্টগ্রাম নগরীতে ট্রাফিক পুলিশের টেন্ডল থেকে রাতারাতি সম্পাদক, ভুঁইফোড় অনলাইন টিভি’র পরিচয়ে চাঁদাবাজি। চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভুঁইফোড় অনলাইন টিভি’র চেয়ারম্যান পরিচয়ে শাহাদাত হোসেন ওরফে রাজুর চাদাঁবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের কোনো কোনো কর্মকর্তার যোগসাজশে কখনও তিনি ট্রাফিক পুলিশ, কখনও ট্রাফিকের টেন্ডল (ক্যাশিয়ার), কখনও আবার কথিত ‘অনলাইন টিভি’র চেয়ারম্যান কখনও অভিনেতা এমন সব পরিচয়ে বিস্তৃত করেছেন চাঁদাবাজির জাল। অন্যদিকে স্থানীয় বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রিকার জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার করে কার্ডধারী এই ভুয়া সাংবাদিক। এসব কার্ড দেখিয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার মানুষকে হুমকিসহ বিভিন্ন উপায়ে চাঁদা দাবি করছেন সে। এতে বিপাকে পড়ছেন পেশাদার সাংবাদিকরা। সাংবাদিকতার মতো একটি পেশার মর্যাদা হুমকির মুখে পড়েছে। বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকরা।

স্থানীয়ারা জানান, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মহানগর বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের বাসায় সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতার পরিকল্পনায় গোপন বৈঠককালে শাহাদাত হোসেন ওরফে রাজুকে আটক করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। তিনমাস কারাভোগের পর বেরিয়ে ফের নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং মোড়ে টেন্ডল হিসেবে যোগ দেন রাজু। টেন্ডল রাজু ইংরেজিতে “রাজপাখি’ নামে ফেইসবুক আইডি খোলে বিভিন্ন সময় বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার, বিষোদগার এবং বিএনপির গুণকীর্তন গেয়ে ফেইসবুক পোস্ট দেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এরপর ২০১৯ সালের জুলাইয়ে আগ্রাবাদের চৌমুহনীর হোটেল হক টাওয়ারের এক পোশাককর্মীকে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তিন দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে শাহাদাত হোসেন রাজু। নগরীর ডবলমুরিং থানায় এ ঘটনায় ধর্ষিতা নারী বাদী হয়ে শাহাদাত হোসেন রাজুর নামে মামলা করে। মামলার পর আটক হওয়ায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমান সে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন গাড়ী থামিয়ে গাড়িতে চোরাই মালামাল রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে গাড়িতে থাকা লোকজনদের ভয়-ভীতি দেখাতে থাকে। টাকা না দিলে ছবি তুলে পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলে তা প্রকাশ করা হবে বলে হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবী করে। দীর্ঘ কারাভোগের পর একটি অনলাইন পোর্টাল এন প্লাস টিভি খুলে যার সম্পাদক টেন্ডল রাজু। সে চট্টগ্রামে শত শত গাড়িতে ভুয়া অনলাইন এন প্লাস টিভি’র স্টিকার সেঁটে ট্রাফিক টেন্ডল রাজুর চাঁদাবাজি নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রচারিত হয়। গোপন সূত্রে আরও জানা যায় গত বছর শাহাদাত হোসেন রাজু নেশাগ্রস্থ অবস্থায় ইয়াবাসহ ডবলমুরিং থানায় আটক হলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছাড়া পেয়ে যান। সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, নগরীর মাদারবাড়ি ছমনা ম্যানশনের ৪র্থ তলায় সন্ধ্যার পর থেকে মাদকের আসর বসিয়ে সুন্দরী রমনী এনে রঙ্গ লীলায় মেতে উঠে। আরও জানাযায় সে এই পর্যন্ত ৫টি বিবাহ করেছে বলে বিশেষ সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে তিন স্ত্রী তার কাছে রয়েছে, তাদের মধ্যে একজন রয়েছে ফটিকছড়ি, আরেক জন চট্টগ্রাম নগরীর মাদার বাড়ি বাসা ভাড়ায় এবং ডিভোর্স হয়ে যাওয়া আরেক স্ত্রী ডিভোর্স অবস্থায় তার গ্রামের বাড়িতে এক পুত্র সন্তান সহ রয়েছেন, এক স্ত্রী দুই পুত্র সন্তান রেখে মৃত্যু বরন করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায় নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার ভাটিরটেক গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে শাহাদাত হোসেন রাজু। তবে সচেতনমহল বলছেন, জাল কার্ডধারী সাংবাদিকরা নানা অপকর্ম করে পার পেয়ে যাচ্ছে। নিজেদের কখনো সাংবাদিক কখনো বা মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন প্রতারণা চালিয়ে আসছে একটি প্রতারকচক্র।সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে যারা প্রতারণা করছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হোক এমনটাই দাবি জানিয়েছেন সচেতনমহলসহ এবং সাংবাদিকরা তারা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। উল্লেখ্যঃ শাহাদাত হোসেন রাজুকে নিয়ে উক্ত সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে-ও তার ভূয়া সাংবাদিকতা এবং চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। নিউজটি যে সাংবাদিকেরা প্রকাশ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিচ্ছে শাহাদাত হোসেন রাজু।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ