সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মন্দিরের পবিত্রতা বিনষ্টের জন্য পরিকল্পিতভাবে আনসার মোতায়ন করা হচ্ছে
হোসেন মিন্টুঃ
প্রবর্তক সংঘের কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি কর্তৃক ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যাচার, ইসকন সাধু সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মন্দিরের পবিত্রতা বিনষ্টের জন্য পরিকল্পিতভাবে মন্দির এলাকায় আনসার মোতায়নের চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইসকন। শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) বৈদিক ঋষিজ পরম্পরার মৌলিক ভাবাদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সারা বিশ্ব জুড়ে হরিনাম সংকীর্তন প্রচারের মাধ্যমে সনাতনী কৃষ্টি ও সংস্কৃতি প্রসার করে চলেছে। ধর্মীয় পূজার্চনাসহ সনাতন ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি ইসকন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দুর্যোগে বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচী, গরীব-দুস্থদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ মানবিক বিপর্যয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ২০০৩ সালে প্রবর্তক সংঘের অনুরোধেই ইসকন শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ইসকন ভক্তবৃন্দ বাংলাদেশের সনাতন সম্প্রদায়ের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করে দৃষ্টিনন্দন ও আন্তর্জাতিক মানের মার্বেল পাথরের একটি মন্দির নির্মাণ করেছে। ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির উন্নয়ন প্রকল্পের শুরু থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মন্দিরের সম্প্রসারণ ও সংস্কার কাজে প্রবর্তক সংঘের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও পূর্ণ সমর্থন থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি শ্রীমন্দির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রবর্তক সংঘ গভর্ণিং বডির মুষ্ঠিমেয় সদস্য তাহাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যর্থ হয়ে চরম প্রতিহিংসা পরায়ণ ও ঈর্ষান্বিত হয়ে বিভিন্নভাবে মন্দিরের সুনাম ক্ষুন্ন করা সহ সাধু সন্ন্যাসীদের সন্ত্রাসী ও জঙ্গী নামে আখ্যায়িত করে সমগ্র সনাতনী সমাজের বির“দ্ধে চরমভাবে ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছে এবং অদ্যাবধি অব্যাহত রেখেছে। তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধু সন্ন্যাসীদের হয়রানি করার পাশাপাশি তাদেরকে নিয়ে নানা কটুক্তি করছে।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রবর্তক সংঘের কুচক্রী মহলটি ইসকনের বিরুদ্ধে উচ্ছেদের নিমিত্তে আইনী নোটিশ প্রদান করলে ইসকনও আইনীভাবে তার জবাব দিয়েছে। সুতরাং ইসকন ও প্রবর্তক সংঘ ইস্যুতে বর্তমানে আইনী প্রক্রিয়া চলমান, যাহা প্রবর্তক সংঘের আইনী নোটিশের বিষয় বস্তু থেকে সুস্পষ্ট হয়। এমতাবস্থায় ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধপূর্ণ জায়গায় বিরোধীয় পক্ষের আবেদনক্রমে আনসার নিয়োগের সিদ্ধান্ত বেআইনী ও অযৌক্তিক। প্রকৃত সত্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে আনসার সদস্যদের সামনে রেখে প্রশাসনকে ইসকনের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে শ্রীকৃষ্ণ মন্দির প্রবর্তক সংঘের নিয়ন্ত্রনে আনার যে জঘন্য ও হীনমনস্ক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে তাহা কোনভাবেই কাম্য নয়। অবিলম্বে সাধু সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধে করা ষড়যন্ত্র বন্ধ না হলে রাজপথে নামার ঘোষণা দেন সাধুরা। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসকন নোয়াখালীর অধ্যক্ষ রসপ্রিয় গৌর দাস অধিকারী, ইসকন প্রবর্তকের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, কক্সবাজার ইসকনের অধ্যক্ষ রাধা গৌবিন্দ দাস ব্রহ্মচারী, ফেনি ইসকনের অধ্যক্ষ নিতাই গৌরাঙ্গ দাস অধিকারী, কুমিল্লা ইসকনের অধ্যক্ষ সুদর্শন জগন্নাথ দাস ব্রহ্মচারী, ইসকন বান্দরবানের অধ্যক্ষ উজ্জ্বলবর্ণ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, ইসকন নন্দনকানন রাধা মাধম মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক তারননিত্যানন্দ দাস ব্রহ্মচারী, ইসকন মোহরা মন্দিরের অধ্যক্ষ সর্বমঙ্গল দাস ব্রহ্মচারী, ইসকন রাঙামাটির অধ্যক্ষ নিতাই নুপুর দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ