মিরসরাইয়ে প্রবীন শিক্ষককে পৌরসভার মেয়র খোকনের মারধর সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
মিরসরাইয়ে প্রবীন শিক্ষককে পৌরসভার মেয়র খোকনের মারধর সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
হোসেন বাবলা, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে গত ১০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে মিরসরাই সুফিয়া নুরিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রবীন শিক্ষক মাষ্টার মোঃ রবিউল হোসেন কে বারইয়ার হাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকন কর্তৃক মারধর ও লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। সংবাদ সম্মেলনে মাষ্টার রবিউল হোসেন তার ওপর গত বুধবার শালিসি বৈঠকে বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র খোকন কর্তৃক মারধর রশি দিয়ে বেধে মেরে ফেলার হুমকি ও দুই গালে ও মাথায় থাপ্পর, বুকে আঘাত করে এছাড়া মোবাইল কেড়ে নেয়ার ঘটনা সাংবাদিকদের কাছে তুলেধরেন। এসময় মাষ্টার রবিউলের পরিবারের সদস্য মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, পারভেজ মিয়া, সুফিয়া নুরিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষার্থী শফিউল আজম বক্তব্য রাখেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মাষ্টার মোঃ রবিউল হোসেনের বড় মেয়ের প্রবাসী স্বামী ফখরুল ইসলাম খান সিআইপির মালিকানাধীন খান মার্কেটের কিছু অংশ রেলওয়ে ও সড়ক জনপথের লীজ নেয়া জায়গা ওপর প্রতিষ্টিত। কিন্তু পৌরসভার মেয়র খোকন গত ২৩ মার্চ দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে খান মার্কেট উচ্ছেদ তাদের বিভিন্ন সম্পত্তি গ্রাস করার চেষ্টা করছে। এর আগেও মেয়র খোকন বিভিন্ন জনকে মারধর সহ নানা অনিয়মের কারনে আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
লিখিত বক্তব্যে মাষ্টার রবিউল হোসেন বলেন, গত বুধবার দুপুরে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া জীবনের শেষ সময়ের হ্রদয় বিদারক ঘটনা বারইয়ারহাট পৌরসভা মিলনায়তনে একটি শালিসি বৈঠকে পৌরসভার সদ্য মেয়র রেজাউল করিম খোকন আমাকে নির্মম ভাবে মারধর ও লাঞ্চিত করেছে। মেয়র আমাকে খানকিনির পুত তুই ভিতরে যা, অফিসের ভিতর নিয়ে নাঈম নামে এক চামচা দিয়ে আমাকে বাধার নির্দেশ দেয়। পরে আমার মোবাইল ছিনিয়ে নেয়, আমাকে সামনা সামনি বসিয়ে গালিগালাজ করে, আমাকে খানকির পুত সম্বোধন করে।আমার দুই গালে ও মাথায় থাপ্পর দেয়, এর পর আমি নিজেই বলি আমাকে মেরে ফেল আমার সমস্যা নেই। আমার বেচে থাকার আর কোন অধিকার নেই, আমার ৬৫ বছরের জীবনে এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি, যা জনপ্রতিনিধি থেকে যে অপমান পেয়েছি। মেয়র হয়ে সে দানবের মতো আচরন করেছে, আমি তার বাবার বয়সী একজন মানুষকে চরম অপমান করা আমার কাছে মৃত্যুর সমতুল্য। তিনি বলেন, আমি সমস্যা সমাধানের জন্য এক সপ্তাহ সময় চেয়েছি, সময় না দিয়ে একটা রায় দেন আমাদের মনপ্রোত না হলে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।এটা বলার পর আমার উপর শারিরিক নির্যাতন করে মেয়র, আমি চেয়ার ওপড়ে পড়ে যায়। পরে আমাকে অজ্ঞান অবস্হায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বেসরকারী ম্যাক্স হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে প্রেসক্লাবে এসেছি। সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের সদস্যরা বলেন, পঞ্চম দফায় নির্বাচিত বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র হিসেবে রেজাউল করিম খোকন চলতি বছরের ২৩ মার্চ ২০২১ সালে শপথ গ্রহনের পর থেকে সাধারণ মানুষের সারা জীবনের অর্জিত সব সম্পত্তি নিজের মনে করে ভোগের চেষ্টা করছে। স্হানীয় লোকজনকে তার প্রজা হিসেবে যাচ্ছে তাই ব্যবহার করছে। সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের শিকিভাগ ও সেবা পাচ্ছেনা, শুধু মেয়রের চেয়ারকে পুজি করে খোকন চেয়ারে বসার পর থেকে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এলাকার মানুষকে সে মানুষ মনে করছে না, তার হাতে নির্মম ভাবে অত্যাচারিত হয়েও এলাকার মানুষ মুখ খুলছেনা। মেয়র খোকনের স্বৈরাচারমুলক আচরন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে হাসপাতালের জায়গায় খাল ও নালা খনন, ব্যক্তি মালিকানাধীন মার্কেট উচ্ছেদ, জায়গা সম্পত্তি দখল সহ নানা অপরাধ করে যাচ্ছে মেয়র খোকন ও তার লোকজন।পৌরসভা এলাকায় প্রবাসীদের জায়গায় জোর করে দখল করে যেমন ইচ্ছা তেমন ভাবে অনিয়ম করছে মেয়র খোকন। বারইয়ারহাট, চিনকি আস্তানা সহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় আগের প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন ড্রেন ভরাট করে ঘর তৈরী সহ নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে নিয়মিত নোটিশ, টাকা আদায় সরকারের নানা তহবিল তশরুপ সহ সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হেনেস্হা মারধর সহ হয়রানীর অভিযোগ করা হয়েছে পৌর মেয়র রেজাউল করিম খোকনের বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শালিসি বৈঠকে একজন শিক্ষক কে মারধর করে রুচিহীন কাজ করেছে মেয়র খোকন, সারাদেশে তার অগনিত ছাত্রকে অপমান করা হয়েছে। তার পিতার সমতুল্য একজন মানুষ ন্যায় বিচার চাইতে মেয়র কার্যালয়ে গিয়ে লাঞ্চিত হয়েছেন। শুধু শিক্ষক নয়, বারইয়ারহাট পৌরসভার ব্যবসায়ী সহ নানা মানুষ মেয়র খোকনের দ্বারা নির্যাতনের শিকার, প্রকাশ্যে চাঁদা দাবী সহ নানা অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিক সম্মেলনে জানান বারইয়ারহাট এলাকায় সাধারন মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে মেয়র খোকন ও তার লোকজন। মেয়র এর ভয়ে তার লোকজনের বিরুদ্বে কেউ কথা বলছেনা। স্থানীয় ওসির কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে প্রশাসনের হাত পা বাঁধা বলে অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন থানার ওসি।