কর্ণফুলী নদীর মাঝিদের দাবি আদায় না হলে লাগাতার ধর্মঘটের ঘোষানা
কর্ণফুলী নদীর মাঝিদের দাবি আদায় না হলে লাগাতার ধর্মঘটের ঘোষানা
চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
ঘাটে চাঁদাবাজী বন্ধের দাবীতে নদী পারাপারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বাংলাবাজার ঘাট ইজারা না দিয়ে বাড়তি মাশুল আদায়ের নামে বাংলাবাজার ঘাট থেকে দক্ষিণ পাড়ে ইছানগরঘাটে চলচলকারী সাম্পান মাঝিদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বুধবার ৪র্থ দিনের মত লাগাতার ধর্মঘটের পাশপাশি দিনভর অনশন কর্মসূচি পালন করেছে কয়েকশ সাম্পান মাঝি।এর আগে গত রোববার (১২সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে যাত্রী পারাপার বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করে আসছে কর্ণফুলী নদীর মাঝিরা। এদিকে লাগাতার ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নদী পার হওয়া ওপারের হাজার হাজার মানুষ। মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বিশেষ করে পোশাক শিল্পের শ্রমিক, সবজি চাষি ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সাম্পান ধর্মঘটের কারণে চরম বেকায়দায় পড়েছেন। এদের অনেকেই কাজে যোগ দিতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ বহু অর্থ এবং দীর্ঘ সময় ব্যয় করে সড়ক পথে শহরে আসা যাওয়া করছে। সাম্পান মাঝিরা জানিয়েছেন, কর্ণফুলী নদী পারাপারে এই নৌপথে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার মানুষ গ্রাম থেকে শহরে আসা যাওয়া করেন। এরা নানা কাজে শহরে আসে এবং কাজ শেষে আবারো গ্রামে ফিরে যান। এদের পারাপারের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে সাম্পান। এই সাম্পানে যাত্রী পারাপারের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ঘাট ইজারা দিয়ে থাকে। কিন্তু এবার ঘাট ইজারা দেয়া হয়নি। স্থানীয় কিছু লোকজন দিয়ে জনপ্রতি ২টাকার বদলে ৫ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
বিষয়টি যাত্রীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে সাম্পান মাঝিদের মাঝেও। তারা বিষয়টি লিখিতভাবে সিটি মেয়রকে জানালেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এই অবস্থায় সাম্পান মাঝিরা গত ৪দিন ধরে ধর্মঘট পালনের পাশপাশি গতকাল বুধবার দিনভর অনশন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ পালন করেছে। বাংলা বাজার সাম্পান কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা আলীউর রহমান বলেন, কর্ণফুলীতে যত ঘাট আছে, সব চসিক ইজারা দেয়, মাঝিরা নেয়। মাঝিরা যাত্রী প্রতি দুই টাকা করে চসিকের জন্য রাখে। আর যে ঘাটে টোল কম সে ঘাটে এক টাকা করে চসিককে দেয়। কিন্তু বাংলাবাজার ঘাটটি চসিক ইজারা না দিয়ে স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসীকে দিয়ে দিয়েছে। এটি নিয়ে সরাসরি মেয়রকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। মেয়র সেটা পাসও করেছেন। এরপরও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, ঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে ইছানগর বাংলাবাজার ঘাটে সাম্পান মাঝিদের ধর্মঘট চলছে। বাংলাবাজার সাম্পান কল্যাণ সমিতির সভাপতি লোকমান দয়াল ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, দ্রুত সমাধান না হলে সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও করবে বলে জানিয়েছেন। ইছানগর বাংলাবাজার ঘাট সাম্পান মালিক সমিতির সভাপতি মো. লোকমান বলেন, ‘ঘাটটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ইজারা না দিয়ে ২ টাকার বদলে ৫ টাকা আদায় করছে। এটি বন্ধ করার জন্য চসিককে চিঠি দিয়েছি। তবুও চসিক স্থানীয় লোক দিয়ে যাত্রী প্রতি ৫ টাকা করে আদায় করছে। এটি বন্ধ করার জন্য মাঝিরা ধর্মঘট শুরু করেন। আমরা মনে করি, ঘাটটি ইজারা না দেওয়ার ক্ষেত্রে চসিকের নিজস্ব লোক জড়িত আছে। বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। এদিকে সাম্পান কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা-সাংবাদিক আলীউর রহমান বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আরোচনার উদ্যোগ না নিলে এবং ফলপ্রসূ আলোচনা ওদাবি আদায় না হলে টানা ধর্মঘটের পাশাপাশি আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষনা দিবেন বলে প্রতিবেদক কে জানিয়েছেন।