কবি বিনয় মজুমদারের জন্মদিন
কবি বিনয় মজুমদারের জন্মদিন
আরজুন নাহারঃ
গতকাল ছিলো কবি বিনয় মজুমদারের জন্মদিন। তাঁকে জন্মদিনের শুভ কামনা ও শ্রদ্ধা। জীবন ক্যানভাসে অশোকের চাকা ত্রিমাত্রিক পতাকা প্রতিভূ। ফিরে এসো চাকা-ঈশ্বরীকে-অঘ্রাণের অনুভূতি মালার আখ্যানপট নন্দনের নতুন সুতা ছাড়ে। পৈত্রিক গ্রাম তারাইল থেকে বিনয় আজও অনিল বরণ মজুমদারের সাথে বৌলতলী স্কুলে যায়। স্বর্গীয় বিপিন বিহারী-বিনোদিনী ডাকে আয় আয়। কোলকাতা-ঠাকুরপুকুর- দুর্গাপুর স্টিল প্লান্ট-কফি হাউজ টই টই করে ঘুরে ফেরে মায়া। বিনয় বাবু হেঁটে যাচ্ছেন কবিতার অমিয় লণ্ঠন হাতে।
বিনয় মজুমদার বা মংটু (জন্ম: ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৪- মৃত্যু: ১১ ডিসেম্বর, ২০০৬) একজন বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও ইঞ্জিনিয়ার। কবি বিনয় মজুমদার মায়ানমারের মিকটিলা জেলার তেডো নামক শহরের নমঃশূদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম বিপিনবিহারী মজুমদার, মায়ের নাম বিনোদিনী। তারা ছিলেন ছয় ভাই-বোন এবং তিনি ছিলেন সবার ছোট। তার ডাক নাম মংটু। “ফিরে এসো চাকা” ছিল তার অতি জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ। ১৯৪২ সালে তাকে বাংলাদেশের একটি স্কুলে ভর্তি করা হয়। ১৯৪৪ সালে তিনি প্রথম বিভাগে ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় পাশ করেন। ১৯৪৬ সালে তাকে গোপালগঞ্জ জেলার বৌলতলী উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়। ১৯৪৮ সালে দেশভাগের সময় তারা সপরিবারে ভারতের কলকাতায় চলে যান। এখানে, ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে কক্রিক রো-রতে অবস্থিত মেট্রপলিটন ইনস্টিটিউট (বউবাজার ব্রাঞ্চ)-এ নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হবার পরে, ১৯৫১ সালে আইএসসি (গণিত) পড়ার জন্য প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে তিনি ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে পাশ করেন। শোনা যায়, তার পাওয়া নম্বর আজও কেউ নাকি ভাঙতে পারেননি। ১৯৫৮ সালের জানুয়ারি মাসে, অর্থাৎ ছাত্রজীবন সমাপ্ত হবার কয়েকমাস পরেই এনবিএ থেকে প্রকাশিত হয় “অতীতের পৃথিবী” নামক একটি অনুবাদ গ্রন্থ। এই বছরেই গ্রন্থজগৎ থেকে বের হয় তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘নক্ষত্রের আলোয়’। তিনি মোট বিশটির কাছাকাছি কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন। যার মধ্যে “ফিরে এসো চাকা” তাঁকে সবচেয়ে বেশি খ্যাতি দিয়েছে l তিনি দীর্ঘ রোগভোগের পরে ২০০৬ সালে মৃত্যুবরণ করন। তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে তাঁকে দুটি বড় পুরস্কার দেওয়া হয়, রবীন্দ্র পুরস্কার এবং একাডেমি পুরস্কার।