সুমাইয়া হত্যার বিচার চেয়ে গ্রামবাসীর মানববন্ধন
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলশিয়া ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে, অন্তঃসত্ত্বা সুমাইয়া আক্তার তমা হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। ২৫ অক্টোবর (সোমবার) সকাল ১১টার সময় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে নিহতের পিতা আব্দুল জলিল ও মাতা নাসিমা বেগম উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে নিহতের পিতা-মাতা দাবি করেন, হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, আর যেনো কোন পিতা ও মাতার বুক খালি না হয় তার আহবান জানান। মানববন্ধনে এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা তাদের বক্তব্য বলেন, নিহত তমাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত উপজেলা কোটা গ্রামের সুজন, রুবেল ও ইকরামুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। উল্লেখ্য গত ১৮ জুলাই রাত ১২ টার সময়, উপজেলার হাসপাতাল রোডে ভাড়া বাড়ি থেকে সিলিংফ্যানে ওড়না পেঁচানো অবস্থায়, অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার তমাকে ঝুঁলতে দেখে তার স্বামী রিয়াজুল ইসলাম সুজন, প্রতিবেশিদের সহায়তায় গৃহবধূকে হাসপাতালে রেখে স্বামী পালিয়ে যায়। নিহত অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর পিতা জলিল শেখ অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা কাদিরপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমান শেখের পুত্র, রিয়াজুল ইসলাম সুজনের সাথে, ২০২০ সালের ৩০জুন আমার মেয়ের বিয়ে হয়। মাত্র ছয়দিন পরে সুজন আমার মেয়ের নামে তালাকের নোটিশ পাঠায়। তখন প্রশাসনের সহযোগিতায় পূনরায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এর পর থেকে সুজনের মা কুমকুম বেগম, মেয়ের ননদ রুমা খাতুন, যৌতুকের দাবিতে মেয়েকে শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন করতো। এরপর সুজন আমার মেয়েকে হাসপাতাল রোডে বাসাভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। সেখানে আমার মেয়ে ছয়মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। কিন্তু সেখানে সুজনের মা ও ননদ চাচাতো ভাই রুবেলের কু পরামর্শে সুজন আমার মেয়ের উপর নির্যাতন শুরু করে। গত ঈদের আগে সুজনের মা ও বোন ভাড়াবাড়িতে এসে মেয়ের কাছে ঈদ খরচের জন্য ১০হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিতে পারায়, আমার মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে, আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। আমার মেয়েকে হাসপাতালে ফেলে সুজন পালিয়ে যাওয়ার পরে, ওই দিন রাত দুইটার দিকে আমি অভয়নগর থানায় মামলা করতে গেলে এসআই উত্তম কুমার, সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে, একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরের দিন থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে এসআই উত্তম কুমার, তার কথার গুরুত্ব না দিয়ে, শুধুমাত্র আত্মহত্যা প্রয়োচণায় সুজনকে আসামি করে মামলা রেকর্ড করে নেয়। আমার মেয়ে হত্যার তিন মাস গড়িয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। গৃহবধূর পিতা আরও বলেন, আমি উপায় না পেয়ে আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি তারও কোন অগ্রগতি হয়নি। মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সদস্য তুহিন শেখ, স্থানীয় কামাল শেখ, সাবেক মহিলা মেম্বার রাফেজা বেগম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমানসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ