সমাজ থেকে অন্যায়-অনাচার দূর করতে নারী জাতির বিকল্প নেই
হোসেন বাবলা,চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
সীতাকুন্ড শঙ্করমঠের শতবর্ষপূতি উপলক্ষে আয়োজিত ৮ দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচীর অংশ হিসেবে চতুর্থ দিন আজ ১৯ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ১১টায় মাতৃসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তাপসী ঘোষ রায়। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করেন অদুল-অনিতা ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান অনিতা চৌধুরী। এসময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তীর সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘গৌরবদীপ্ত শতবর্ষে শঙ্করমঠ ও মিশন’ নামক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। শঙ্করমঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে, প্রমথ সরকার ও তন্বী পালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মাতৃসম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনারের সহধর্মিনী রুনা ব্যানার্জী।

প্রধান আলোচক ছিলেন ঢাকাস্থ ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী সিআইপি। আলোচক ছিলেন ঢাকার হাজি সেলিম ডিগ্রী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. ছায়া চাটার্জী, নোয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর বিজয়লক্ষী দেবী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ রুনু মজুমদার, সীতাকুন্ডস্থ লতিফা সিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক মৃনালিনী চক্রবর্তী, মঠের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর কেশব কুমার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী ও বিশিষ্ট দানবীর লায়ন অদুল চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মাতৃ সংগঠনের উন্নয়ন সম্পাদক গীতাশ্রী দাশ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শঙ্করমঠ ও মিশনের মহিলা পরিষদের সভাপতি অনিমা মল্লিক ও সহ-সভাপতি রীণা বিশ্বাস, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মঞ্জু রানী শীল ও শিক্ষিকা শিখা রানী শীল। বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত হয় ‘সনাতন ধর্মদর্শনের দিকপাল আচার্য্য শঙ্কর’ বিষয়ক ধমীয় আলোচনা সভা। শঙ্করমঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের সভাপতিত্বে ও প্রমথ সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মঠের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর কেশব কুমার চৌধুরী। আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট দানবীর লায়ন অদুল চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মঠের সহ-সভাপতি অধ্যাপক তড়িৎ কুমার ভট্টাচার্য, সহ-সভাপতি রণধীর ঘোষ রায়, যুগ্ম সম্পাদক বাসুদেব দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার অজিত কুমার শীল, প্রকৌশলী সুবল শীল, প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল প্রমূখ। এছাড়া অনুষ্ঠান উপলক্ষে সকাল থেকে গুরু পূজা, অখন্ড গীতাপাঠের ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ মনোহারিত্ব অনুষ্ঠান, শ্রীশ্রীবিশ্বশান্তি গীতাযজ্ঞ, মঙ্গলারতি, গুরু বন্দনা, হরি ওঁ কীর্ত্তন, শ্রীশ্রী চন্ডী ও বেদপাঠ করা হয়।মাতৃসম্মেলন ও আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পরিবার, সমাজ ও উন্নত দেশ গঠনে নারীদের ভূমিকা অপরিসীম। সমাজ থেকে অন্যায়-অনাচার দূর করতে হলে নারী জাতির কোন বিকল্প নেই। সকল ধর্মের পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এগিয়ে আসলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে। একই সাথে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, মঠ-মন্দির শুধু ধর্ম চর্চার সাধনা করে না। মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি ও সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। ধর্মবোধ মানুষকে ন্যায়ের শিক্ষা দিয়ে সভ্য করেছে। গীতার আদর্শ ও উদ্দেশ্য বুকে ধারণ করতে পারলে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ হবে।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ