বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র আজ থেকে টেরিস্ট্রিয়াল এবং কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা সম্প্রচার শুরু
বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র আজ থেকে টেরিস্ট্রিয়াল এবং কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা সম্প্রচার শুরু
আরজুন নাহারঃ
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু হয়েছিল বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের। তিন পাহাড়ি জেলাসহ এ অঞ্চলের ইতিহাস ঐতিহ্য কৃষ্টি সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য চালু করা হয়েছিল এ কেন্দ্র। বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ইতিহাস বিশ্বময় তুলে ধরার প্রয়াসে চট্টগ্রামে একটি সম্প্রচার মাধ্যম প্রতিষ্ঠা ছিল এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। তারই প্রেক্ষিতে তখন কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্বল্প পরিসরে প্রথমে দেড় ঘন্টার অনুষ্ঠান সম্প্রচারের মধ্যদিয়ে কেন্দ্রটির যাত্রা হয়েছিল। পরবর্তিতে এটি ২০১৬ সালে ৬ ঘন্টা, ২০১৯ সালে ৯ ঘন্টা, ২০২০ সালে ১২ ঘন্টা, ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি হতে ১৮ ঘন্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে আসছিল। কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের চাহিদা ছিল ২৪ ঘন্টা সম্প্রচার চালুর। অবশেষে আজ সে চাহিদা পূরণ হয়েছে। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র আজ থেকে টেরিস্ট্রিয়াল এবং কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা সম্প্রচার চালু শুরু করেছে। আজ রবিবার ১৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রটির ২৫ বছর পূর্তি বা রজতজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেকর্ডকৃত ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ কেন্দ্রের ২৪ ঘন্টা সম্প্রচার চালু উদ্বোধন করেন। একইসাথে ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষকে শুভেচ্ছা জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, কেন্দ্রটি এ অঞ্চলের জনচাহিদা পূরণে সক্ষম হবে। এ উপলক্ষ্যে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন পিএএ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, বিটিভির মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জিএম নিতাই কুমার ভট্টাচার্য প্রমূখ। তথ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি একটি জাতীয় টেলিভিশন কেন্দ্র।অন্যান্য জাতীয় কেন্দ্রের মতোই কেন্দ্রটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সমৃদ্ধ ঐতিহ্য তুলে ধরার সাথে সাথে এ অঞ্চলের ইতিহাস ঐতিহ্য এখানে গুরুত্ব পাবে। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিতে কাজ করছে। ৪৫টি টেলিভিশন চ্যানেলকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এর সাথে রয়েছে অসংখ্য প্রিন্টিং, অনলাইন এবং সোস্যাল মিডিয়া। এসব মিডিয়াসমুহের সার্বিক কল্যাণেও সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে ক্লিনফিড নিশ্চিত করা হয়েছে। অল্প কিছু সময়ের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কেবল নেটওয়ার্ক ডিজিটালাইজেশনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তিনি বলেন, ৬টি বিভাগে বিটিভির আরো ৬টি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কাজ অনেকদুর এগিয়েছে। এগুলোর কাজ একমাসের মধ্যে হয়ে যাবে। এগুলো চালু হলে দেশে বিদেশে বিটিভির ১০টি চ্যানেল সম্প্রচারে থাকবে। তিনি বলেন, বর্তমানে সম্প্রচারে থাকা কেন্দ্রগুলো টেরিস্ট্রিয়াল এবং মোবাইল এ্যাপসের মাধ্যমে দেশ বিদেশ থেকে যেকোন সময় দেখা যায়। নতুন ৬টি কেন্দ্রও মোবাইল এ্যাপসের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে যেকোন সময় দেখা যাবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করছে তা উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ। অথচ অনেক উন্নত দেশেও এমন অবাধ স্বাধীনতা দেখা যায়না। অনেক নামী ও পুরনো পত্রিকাকেও অসত্য তথ্য প্রচারের কারনে বন্ধ হতে হয়েছে। বিবিসির মতো বিশ্বগণমাধ্যমকে অসত্য তথ্য প্রচার করার কারনে সংশ্লিষ্ট অনেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত তথ্য সমাজে প্রভাব বিস্তার করতে পারে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, অনেক বিষয় লাইভ সম্প্রচারের কারনে জনমনে খারাপ প্রভাব সৃষ্টি হয়। অনেকে এসব দেখে বিভিন্ন কাজে উৎসাহিত হয়। এসব থেকে বিরত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে আমার স্বাধীনতা যেন অন্যের স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গ না করে। গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত অনুষ্ঠান সমাজে যেন মূল্যবোধ দেশাত্ববোধ জাগ্রত ও শিক্ষনীয় বার্তা বহন করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মন্ত্রী গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পনের ভূমিকা পালনের আহব্বান জানান। এ উপলক্ষ্যে সকালে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করা হয়। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন পিএএ শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন।