বিষাক্ত জলপরী 
প্রদীপ দত্ত
সেসব সূদীর্ঘ দিনগুলোতে 
ধুলো আর গাড়ির হর্ণ ভেদ করে দেখা দিনগুলোতে 
পথের সীমারেখা ভুলে
যারা গিয়েছিলাম নতুন পথের সন্ধানে 
তাদের কেউ কেউ পথে রয়ে গেলো।
সেসব লাললাঠি,চাড়াভাঙা খেলার দিনগুলোকে
খেয়ে নিলো রাক্ষুসে গোল বল
সে সাঁতার কাটা দিঘিগুলো আজ সব অট্টালিকার 
হয়ে গেছে। বিলের মাঠের শালুক দেখা এখন এক
মোহনীয় কাজ।
কৃষকের ধান কাটার ছবি আকঁত যে শিল্পী 
সে এখন এবস্ট্রাকট আঁকিবুঁকি করে।
সে সব মেঠো পথ আর নেই 
পিচ পড়ছে ধানের আলের পথগুলোতে
মাটির পরতে পরতে জমছে
বিষাক্ত পলিথিন..। 
সেসব লাললাল ভাতের রৌয়া ওঠাগন্ধের
জায়গায় এখন মিলছাটা হাইব্রিড। 
নদী,নালা,খালবিল গুলো অবৈধ সম্পর্কের বাধ
দিয়ে ঘেরা।
সারাদিন ড্রেজার মেশিনের বালি তোলার 
কারিকুরিতে, বিষাক্ত তলদেশ। 
আজকাল আর জাকিয়ে শীত আসেনা
কূয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে 
গুটিসুটি বসেনা পাড়ার তিনমাথা বুড়োরা।
যা খুশি তাই করা দিনে
সম্পর্কের বাধন বড় আগলা বেড়া আজকাল
মোহনীয় রাত শেষ করে
নিচ্ছিদ্র ঘুমে দিবা স্বপ্ন দেখে
বারনারী।ভালবাসা প্রেম হয়ে গেছে আজকাল।
সুখের পাতার খোঁজ দেয় কেউ কেউ 
ছড়ায় বিষাক্ত হেমলক
সমাজের নিভৃত অলিতে গলিতে
ছন্দে ছন্দে পুরাণকাহিনির গল্পে
চোখ বুজে সুখ স্বপ্ন দেখে
প্রেমানন্দ স্বর্গে প্রেমের সুখের
নিশ্চিন্ত জীবন যাপনের ঘোর নিয়ে।
সদা সত্যের বিকল্প খুঁজতে 
গিয়ে নিছকই ঘোরের বশে
কেউ কেউ হয়ে ওঠে
অতি দানব।
নষ্টদের গড়া ঘোরটোপে
ধরা পড়ে সোনালী জীবন
নষ্টদের জয় হয়…  
পাপড়ি হারিয়ে এক একটি
গোলাপ ফুল
হয়ে ওঠে কাঁটা গাছ
হয়ে ওঠে বিষাক্ত জলপরী।

দৈনিক নব দেশ বার্তা / কবিতা 

নিউজটি শেয়ার করুনঃ