সীতাকুণ্ডের অপরুপ প্রকৃতির সুন্দর্য্যের লীলাভূমি গুলিয়াখালী সি বীচ কে পর্যটন এলাকা ঘোষণা
আবদুল মামুন,সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রতিনিধিঃ
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্যে ভরপুর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায়য় অবস্থিত গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা করেছে সরকার। সমুদ্র সৈকত এলাকার ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ২৫৯.১০ একর জায়গাকে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করেছে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব শ্যামলী নবী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ বা অন্য কোনরূপ কার্যক্রম গ্রহণের কারণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত এলাকার ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ২৫৯.১০ একর এলাকায় পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশ ব্যহত হচ্ছে বা ভবিষ্যতে আরও ব্যহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প ও সেবা খাতের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে এবং পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকায় অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ বা অন্য কোনরূপ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকল্পে বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন, ২০১০ এর (৪) ধারার ক্ষমতাবলে এই এলাকা পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হলো। বাহারী রঙের বৃক্ষ আর সবুজের সমারোহ পরিবেশকে আরো সৌন্দর্য মন্ডিত করেছে।

বিশাল আয়তনের এই পর্যটন স্থান দেখতে দূর দূরান্তর থেকে অধীর আগ্রহে পর্যটকরা ঘুরতে আসেন। একদিকে দিগন্তজোড়া জলরাশি আর অন্যদিকে কেওড়া বন। আছে সবুজগালিচার বিস্তৃত ঘাস। তার মাঝে বয়ে চলেছে আঁকাবাঁকা নালা। জোয়ারের পানিতে সবুজ ঘাসের ফাঁকে নালাগুলো কানায় কানায় ভরে ওঠে। জোয়ার চলে গেলে ফিরে যায় আগের অবস্থায়। মৃদু বাতাস আর গাছের পাতার ফিসফিসানিতে তপ্ত দুপুর, স্নিগ্ধ বিকেল কিংবা বিষণ্ণ সন্ধ্যাটি যে কাউকে রাঙিয়ে তুলবে বর্ণিল আলোকছটায়। খাল ধরে এগিয়ে গেলে মিলবে সমুদ্রের অপার সৌন্দর্য উপভোগের এক অভাবনীয় মুহূর্ত। চোখের সামনে অনন্যসুন্দরের এক সৈকত।গুলিয়াখালী বীচকে সাজাতে কোনো কার্পণ্য করেনি প্রকৃতি।সবকিছু মিলে এ যেন প্রকৃতির অন্যরকম আশীর্বাদ’। এই সৈকতের একপাশে রয়েছে সাগরের জলরাশি, অন্যপাশে কেওড়া বন। দেখা মিলবে সোয়াম্প ফরেস্ট আর ম্যানগ্রোভ বনের অন্যরকম মিলিত রূপ। এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ডঃ আহমদ কায়কাউস সীতাকুণ্ড উপজেলার গুলিয়াখালী বীচ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি গুলিয়াখালীর বীচের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন তিনি। উল্লেখ্য, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতকে পর্যটনের আওতায় এনে নেয়া হচ্ছে মহাপরিকল্পনা। রাস্তার উন্নয়ন, হোটেল-মোটেল, রির্সোট গড়ে তুলতে ভূমি জরিপের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে প্রস্তাবনা। প্রস্তাব অনুমোদিত হলে বীচ উন্নয়নের মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়ীত হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, পর্যটনের অপার সম্ভবনা হয়ে উঠেছে সীতাকুণ্ড। খুব কাছ থেকে পাহাড়ী ঝর্ণা ও সমুদ্রের উত্তর তরঙ্গ উপভোগ করতে পারে পর্যটকরা। সৌন্দর্য্য উপভোগে পর্যটকের ভীড় জমতে থাকায় গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতকে পর্যটনে রুপ দিতে নেয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনা। ধীরে ধীরে নানা পরিকল্পনা গ্রহন করে গুলিয়াখালী বীচকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র রুপ দেয়া হবে বলে জানান তিনি। স্থানীয়দের কাছে সৈকতটি মুরাদপুর সি-বীচ নামে পরিচিত। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া না লাগলেও এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দল বেঁধে অনেক দর্শনার্থী ছুঁটে আসছেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যের এই সৈকতে।সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারি উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গুলিয়াখালী বীচ হতে পারে দেশের পর্যটনের অন্যতম একটি স্থান। আর তা সম্ভব হলে দেশের পর্যটন খাতে অনেক বড় অবদান রাখতে পারবে এটি।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ