১০ টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী র্যাবের হাতে গ্রেফতার
১০ টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী র্যাবের হাতে গ্রেফতার
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ
গ্রেফতারকৃত আসামী আলী আজগর মানিক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার। র্যাব-৪ রাজধানীর সিদ্দেশ্বরী এলাকায় অভিযান চালিয়ে টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার মালিক ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী আলী আজগর মানিক’কে গ্রেফতার করেছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকা মহানগরীর সিদ্দেশ্বরী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৩টি আইপি টিভি চ্যানেল ও ১টি পত্রিকার মালিক ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী মোঃ আলী আজগর মানিক (৪৮) জেলা- চট্টগ্রাম কে গ্রেফতার করতে করেন।
গ্রেফতারকৃত আলী আজগর মানিক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি স্বাক্ষরজ্ঞানহীন অথচ তিনি একটি দুটি নয় বরং ৩টি আইপি টেলিভিশন চ্যানেলের চেয়ারম্যান যেগুলোর নাম যথাক্রমে সিটিজি ক্রাইম টিভি, সিটিজি টিভি ও বার্তা টিভিসহ আই বার্তা নামে একটি দৈনিক পত্রিকারও সম্পাদক তিনি। উদ্দেশ্য ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা করে সাংবাদিক কার্ড বিক্রি করা। চট্টগ্রামে উত্থান হওয়া এই প্রতারক নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানি, প্রতারণা, চাঁদাবাজীসহ অন্তত ১০টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী। আলী আজগর মানিক একের পর এক অপরাধ ঘটিয়ে চট্টগ্রামে টিকতে না পেরে গত ২ বছর ধরে পালিয়ে ঢাকার অবস্থান করে। পলাতক অবস্থায়ই সম্পূর্ণ ভুয়া ও অনুমোদনহীন ৩টি আইপি টেলিভিশন চ্যানেল এবং অনুমোদনহীন নামসর্বস্ব একটি দৈনিক পত্রিকাসহ ৪ টি মিডিয়ায় সাংবাদিক বানানোর নামে সারাদেশের অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমানের মোটা অংকের অর্থ। মূলত এটিই তার প্রধান আয়ের উৎস।
অপরাধের কৌশলঃ আলী আজগর মানিক উক্ত আইপি টিভি চ্যানেল ও দৈনিক পত্রিকা খুলে মিডিয়ার জন্য সাংবাদিক বানানোর কথা বলে প্রথমে বিজ্ঞাপন দেয়। এতে বিভিন্ন বেকার ও নিরীহ লোকজন তার বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট হয় এবং তার সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে আলী আজগর মানিক তাদের জানায় যে সাংবাদিক হতে হলে প্রথমে তাকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ৪/৫ হাজার টাকা পাঠাতে হবে। সে কখনো সরাসরি কারো সাথে দেখা করতো না এবং তার অফিস ও বাসার ঠিকানা কাউকে দিতো না। তার কথা বিভিন্ন লোকজন সরল মনে বিশ্বাস করে সাংবাদিক হওয়ার আশায় তাকে ৪/৫ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতো। টাকা পাওয়ার পর আলী আজগর মানিক উক্ত ব্যক্তিদের সাথে আর কোন যোগাযোগ রাখতো না। এভাবে সে দীর্ঘদিন যাবত প্রতারণার উদ্দেশে অসংখ্যা বেকার ও নিরীহ লোকজনকে সাংবাদিক বানানোর কথা বলে তাদের নিকট হতে বিপুল পরিমানের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তা আত্মসাত করে আসছে। এছাড়া আলী আজগর মানিক চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সাধারণ লোকজন, বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সমাজের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নামে ভূয়া এবং বানোয়াট সংবাদ প্রচারের ভয়-ভীতি প্রদান করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবী করে তা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছে। আজগর আলী মানিক বিভিন্ন নারীদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তাছাড়া সে একাধিক বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল। যে মেয়েকে তার পছন্দ হতো তাকেই সে বিভিন্ন ভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্তক্ত করে। তার কুপ্রস্তাবে কোন মেয়ে রাজি না হলে সে তাদের নামে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আপত্তিকর কথা লিখে এবং বিভিন্ন সময় তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিত মর্মে আজগর আলী মানিক স্বীকার করে। এই পর্যন্ত আজগর আলী মানিক বিভিন্ন লোকজন থেকে প্রতারণা মূলক ভাবে অনুমানিক ৪/৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আজগর আলী মানিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।