লবণের পানিতে পিচ্চিল পটিয়ার ইন্দ্রপুল মহাসড়ক দুর্ঘটনায় হুমকির মুখে
পটিয়া উপজেলা প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান মহাসড়ক পটিয়া পৌর সদর প্রাণ কেন্দ্রে ইন্দ্রপুল লবণ শিল্প এলাকায় মহাসড়কে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ঘটনা। এতে ছোট, বড় বিভিন্ন ধরণের যানবাহনের দূর্ঘটনার স্বীকারে বেশ কিছু লোকজন মৃত্যুবরণ সহ অনেকে গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে। কিন্তু অপরিশোধিত লবণবাহী ট্রাক ও পরিবহনের সময় কাঁচা মাটি রাস্তায় লবন ট্রাক থেকে ঝড়ে পড়া পানিতে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনায় হুমকির মুখে। যে কোনোও সময় বড় ধরনের দূর্ঘানার আশংকা রয়েছে। এ সব লবণবাহী ট্রাকে জিইও ট্যাক্স (মোটা ত্রিপল) ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা মানছে না লবন ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যানবাহনে যাতায়াতের কারণে এ সড়কে দিন দিন গাড়ি চলাচল বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাড়ি চালকদের অসাবধানতায় ও গাড়ী চালানোর প্রতিযোগিতা ছাড়াও ওভারটেক সহ গাড়ি ব্রেক কষলেই লবণের নিঃসৃত পানি ও কাঁচা মাটি রাস্তায় আঠালো আস্তরণের স্পর্শে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে। এতে গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ নতুবা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে এক কিলোমিটার মহাসডক এলাকা জুড়ে মহাসড়কে প্রতিদিন বাড়ছে দুর্ঘটনা। সরেজমিনে জানা যায় চলতি মৌসুমে কক্সবাজার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, মহেশখালী, উখিয়া, কুতুবদিয়া, চকরিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় লবণ উৎপাদন হয়। নৌ ও স্থল পথে এসব লবণ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। তবে বেশির ভাগ লবণ পটিয়া ইন্দ্রপুল এলাকায় পরিশোধনাগারে আনা হয়। খরচ ও দুরত্ব কম হওয়ায় বেশির ভাগ উৎপাদিত লবণ পটিয়ায় আনা হয়। ইন্দ্রপুল শিল্প এলাকায় প্রতি রাতে অনেক ট্রাক থেকে আনলোড করা হয় লবণ। ইন্দ্রপুলের উভয় পাশের লবণ পরিশোধনাগার রয়েছে।এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটলেও তা বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীরা জানান। পটিয়া পৌর আ”লীগ সভাপতি আলমগীর আলম ও সম্পাদক এম,এন,এ নাছির, অর্থ-সস্পাদক দেবাশীষ দাশ দীপক, পৌর আ”লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর, পটিয়া আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বি,এম নাজিম, ৩নং ওয়ার্ড আ’লীগের সাঃসম্পাদক মাহাবুবুল আলম ও হাজী মোঃ রুহুল আমিন লিটু, সহ অনেকে বলছেন, আমরা নিরাপদ সড়ক চাই। লবণবাহী ট্রাক থেকে নিঃসৃত পানি ও পরিবহনের সময় কাঁচা মাটি রাস্তায় পড়ে একটি আস্তরণ সৃষ্টি হয়ে ওই আস্তরণে স্পর্শে রাস্তা হয়ে যায় পিচ্ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত মহাসড়ক ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।

আবার দিনে সূর্যের আলোতে রাস্তা শুকিয়ে গেলেও অনেক জায়গায় আলো না পড়ায় লবনের ঝড়ে পড়া পানি মিছে কাঁদায় পিচ্ছিল হয়ে বিভিন্ন ধরনের ছোট, বড় যানবাহন চলাচলে সামান্য ব্রেক কষলেই দুর্ঘটনায় বেশ কিছু প্রাণহানির সহ অনেকে আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। পৌর মেয়র মোঃ আইয়ুব বাবুল বলেন, একটি দুর্ঘটনা একটি পরিবারের সারা জীবনের কান্না। এ বিষয়ে আমি খবর পেয়ে পরিদর্শন কালে লবন বোঝাই পানিতে পিচ্ছিল সড়ক পটিয়া ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় লবনের উচ্ছিষ্ট পরিস্কার করে মালিক সমিতিকে চিঠি দিয়েছি। তাঁরা সড়কের পাশে লবণ আনলোড অব্যাহত রাখা ও নিয়ম না মানলে লবণ মালিক সমিতির বিরুদ্ধে পৌরসভা আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শিগগির লবণ মালিকদের সঙ্গে বসব। যাঁরা সড়কের পাশে লবণ আনলোড করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে পটিয়া লবণ মিল মালিক সমিতির সাঃসম্পাদক ফজলুল হক আল্লাই বলেন, সড়কের উপর যাঁরা পানি যুক্ত লবণ আনলোড করেন, তাঁদের সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে লবণ আনলোড বন্ধ করতে বলা হয়। মিল মালিককে আবারও সতর্ক করব। অন্যথায় তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেব। পটিয়া ১নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর আবদুল খালেক বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া জন্য জোড় দাবি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ