জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন ও প্রকল্পের হিসাব প্রকাশ মশার উপদ্রোব কমানো নালা নর্দমা পরিষ্কারের আহ্বান
আরজুন নাহারঃ
চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে জলাবদ্ধতা নিরসন, প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন ও প্রকল্পের হিসাব প্রকাশ, মশার উপদ্রোব কমানো, নালা নর্দমা পরিষ্কারসহ চলমান সমস্যা সমাধানের দাবীতে ১০ই এপ্রিল বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন। সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন ফোরামের মহাসচিব মো. কামাল উদ্দিন। সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা চট্টগ্রামের উন্নয়নের দাবীতে ৮০দশক হতে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। বিশেষ করে চাক্তাইর খাল খনন ও বৃহত্তর চট্টগ্রামের মৌলিক সমস্যা সমাধানের দাবীতে ১৯৮৮ সালে ১৪ই আগস্ট বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিয়মত্রান্ত্রিক কর্মসূচির পালন করেছি। আজকের উন্নয়নের দৃশ্য সমূহ আমাদের আন্দোলনের ফসল। চট্টগ্রাম নগরী যখন পানিতে তলিয়ে যাচ্ছিল তখন জলবদ্ধতা নিরসনের দাবী নিয়ে আমরা ২০১৫ সালে ৩১শে জুলাই চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম প্রতিষ্ঠা করেছি। সেই ফোরামের দাবীর প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতর্ৃপক্ষের অনুকূলে পাঁচ হাজার ছয় শত ষোল কোটি টাকা জলবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের জন্য বরাদ্ধ দিয়েছেন। যথা সময় প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা থাকলেও অদ্যবদি নিরসন প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তাবায়ন হয়নি।

তাই এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাবী জানিয়ে বলছি যে, অবিলম্বে জরুরী ভিত্তিতে জলবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করুন। অন্যদিকে প্রকল্পের কাজে কত পরিমান টাকা ব্যায় হয়েছে চট্টগ্রামবাসীর কাছে হিসেব দেওয়ার জন্য সিডিএ’র প্রতি আহ্বান জানান। আমরা বিগত কয়েকদিন যাবৎ মেগা প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন স্থানে কার্যক্রম পরিদর্শন করেছি। বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারের পিছনে যে খালটি তা চাক্তাই খালের অংশ, কিন্তু সেটিতে কেন এখনো হাত দেওয়া হয়নি তা বোধগম্য নয়! সেখানে অনেকাংশ পলিথিন ব্যাগ এবং আবর্জনা ভরাট হয়ে আছে এবং এর উপর সিটি কর্পোরেশনের সার্কেল ২ এর অফিস এখনো বহাল আছে। এতে খালের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ হাইকোর্টের একটি সিদ্ধান্তের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক এবং বেআইনি। এটি ভাঙা না হলে আমরা চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম হাইকোর্টের নির্দেশনার জন্য উদ্যোগ নেবো। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, শেখ মুজিব রোড কালভার্ট সংস্কারের জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অথচ এটি শত শত কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু আজ উক্ত কালভার্টটি পরিত্যাক্ত হয়ে আছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খালেদ বলেন, চাক্তাইর খাল অনেকাংশে ভরাট হয়ে আছে সুইস গেট দেওয়ার পর আরও ভরাট হয়ে যেতে পারে। তাই প্রতিটি খালকে নিয়মিত খননের আওতায় আনতে হবে। সূচনা বক্তব্যে ফোরামের মহাসচিব মো. কামাল উদ্দিন বলেন, সরকারের বরাদ্দকৃত টাকার হিসাব চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে। আমাদের চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের আন্দোলনের ফসল জলবদ্ধতা নিরসনের বরাদ্দ পাওয়া। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চিলেন-ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা জাফর, লায়লা ইব্রাহিম বানু, যুগ্ম মহাসচিব আকরাম হোসেন, কাজি গোলাপ রহমান, ইমতিয়াজ আহম্মদ, অ্যাডভোকেট টি, আর খান, মোহাম্মদ ফোরাকান, কামরুল হাসান, এ জি এম জাহাঙ্গির আলম, ইমতিয়াজ মির্জা শাওন, অধ্যাপক ফরিদ আহমদ, নারী নেত্রী কুসুম আক্তার, কবি ও সংবাদিক তসলিম খাঁ, আসিস চৌধুরী, রহিমা আক্তার ডলি, লাভলী ডিও, পংকজ কুমার ও মামুন চৌধুরী প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনের পরিশেষে বক্তার বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে নগরীকে মশামুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে আমরা গণ-অনশনসহ বিভিন্ন ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ