সীতাকুণ্ডে সমুদ্র উপকূলের জায়গার মালিকানা নিয়ে বনবিভাগ ও ইউনিটেক্স গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে
আবদুল মামুন, সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ৫নং বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নস্থ সমুদ্র উপকূলের জায়গার মালিকানা নিয়ে বন বিভাগ ও ইউনিটেক্স গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড সমুদ্র উপকূলের ৩০ একর জমি দখল হওয়ার অভিযোগ পেয়ে মঙ্গবাল (১২এপ্রিল) সীতাকুণ্ড রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বাঁশবাড়িয়া বিট কর্মকর্তা এবং বন বিভাগের লোকজন নিয়ে পরিদর্শনে যান চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক সাইফুল ইসলাম। এসময় বিস্তৃত এলাকাজুড়ে উপকূলীয় কেওড়া বন ধ্বংস, মাটি কেটে গভীর খাদের সৃষ্টি ও ইউনিটেক্স গ্রুপ কর্তৃক অবৈধভাবে বনের জায়গা দখল করে অর্ধশত সীমানা খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে দেখতে পেয়ে খুঁটিগুলো অপসারণের নির্দেশন দেন তিনি। পরে বন বিভাগের পরিদর্শন ও খুঁটি অপসারণের খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজীকে সঙ্গী করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ইউনিটেক্স গ্রুপের ডিরেক্টর(লিগ্যাল এন্ড স্টেইট) ফারহান আহমেদ। এসময় তিনি (ফারহান আহমেদ) সীমানা খুঁটি অপসারণে বাধা দেন এবং জায়গাগুলো তাদের ক্রয়কৃত বলে দাবি করেন। একইসাথে ফারহান আহমেদের কথার সুর ধরে বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজী বন কর্মকর্তাদের জানান, সমুদ্র উপকূলীয় জায়গাগুলো আমাদের মৌরসী সম্পত্তি। আমরাই এগুলো ইউনিটেক্স গ্রুপের কাছে বিক্রি করেছি।

এসময় ইউনিটেক্স গ্রুপের ফারহান আহমেদ ও বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজী এবং সহকারী বন সংরক্ষক সাইফুল ইসলাম, উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল হোসেন, বাঁশবাড়িয়া বিট কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম সর্দারের মাঝে বেশিকিছু সময় তর্কবিতর্ক হয়৷ এক পর্যায়ে ইউনিটেক্স গ্রুপের ফারহান আহমেদ স্বপ্রণোদিত হয়ে সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার(ভূমি) আশরাফুল আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন। পরে বন কর্মকর্তাদেরকে বুধবার দুপুরে সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে এক মিটিং আহবান করেন তাতে যোগ দেয়ার অনুরোধ করেন। এসময় বন কর্মকর্তারও সম্মতি প্রদান করেন। এ বিষয়ে বন বিভাগের বাঁশবাড়িয়া বিটের বিট কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম সর্দার জানান, ইউনিটেক্স গ্রুপ বন বিভাগের অনেক জায়গা দখলে নিয়েছে। আমরা বেশকিছু খুঁটি উচ্ছেদ করি। পরে তারা আবারও তা স্থাপন করে। বুধবার আমরা আমাদের কাগজপত্র নিয়ে হাজির হব। সেখানে দেখা যাবে জায়গা কার কতটুকু। উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল হোসেন জানান, আমরা বনের জায়গা দখল হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পরিদর্শন করি। পরিদর্শনে সহকারী বন সংরক্ষক উপস্থিত ছিলেন।ইউনিটেক্স গ্রুপ তাদের ক্রয়কৃত বলে দাবি করছে। বুধবারের বৈঠকে সে বিষয়ে জানা যাবে। চট্টগ্রাম সহকারী বন সংরক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, বাড়বকুণ্ড সমুদ্র উপকূল এলাকায় বালু উত্তোলন, মাটি কেটে উপকূলে গভীর খাদের সৃষ্টি, কেওড়া বন ধ্বংস ও অবৈধ দখল দেখতে পাই। এখানে বন বিভাগ কাউকে লিজ দেয়নি। তাদের সাথে বুধবার বৈঠক হলে সেখানে জানা যাবে জায়গাগুলোর প্রকৃত মালিক কে?

নিউজটি শেয়ার করুনঃ