মন কেড়ে নিয়েছে ‘কাঁচা বাদাম ও পুষ্পা থ্রি-পিস’
মন কেড়ে নিয়েছে ‘কাঁচা বাদাম ও পুষ্পা থ্রি-পিস’
দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
এবার ঈদের বাজারে ভারতের বীরভূম এলাকার বাদাম বিক্রেতা ভূবন বাদ্যকারের ভাইরাল হওয়া সেই কাঁচা বাদামখ্যাত গানের মতো ‘কাঁচা বাদাম থ্রী-পিস’ ও পুষ্পা দিনাজপুরের মন কেড়ে নিয়েছে। ভারত থেকে উড়ে এসেছে কাঁচা বাদাম থ্রি-পিস। ভারতের আদলে বাংলাদেশ তৈরি কাঁচা বাদাম থ্রি-পিস ব্যাপক মনজয় করেছে ললনাদের। শুধু কাঁচা বাদামই নয়, বিখ্যাত তেলেগু সিনেমা ‘পুষ্পা’র নামের সঙ্গে মিল রেখে ঈদের বাজারে নারীদের জন্য এসেছে ‘পুষ্পা’ থ্রিপিস। ছয়টি রঙের ‘কাঁচা বাদাম’ এবং বাহারি রঙের পুষ্পা থ্রিপিস ইতোমধ্যে ক্রেতাদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচা বাদাম গানটি বেশ জনপ্রিয়। তাই এই নামে পোশাকের ট্রেন্ড চালু করা হয়েছে, বিক্রিও ভালো, নামের কারণে থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে বেশি। অনেকে না কিনলেও নাম শুনে দেখতে চাইছেন। দিনাজপুরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, লাল, নীল, কালো, সবুজসহ বাজারে ছয় ধরনের কাঁচা বাদাম থ্রিপিস এসেছে। এর মধ্যে কালো রঙের চাহিদা বেশি। মূল্য ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। কাঁচা বাদামের চেয়ে পুষ্পা থ্রিপিসের চাহিদা কম। বাজারে দুই ধরনের পুষ্পা থ্রিপিস এসেছে। দাম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। পুষ্পা ও কাঁচা বাদামের বিক্রি এখনও
আশানুরূপ হয়নি বলে জানান বিক্রেতারা। বলেন, শেষ ৩ দিন বিক্রি বাড়বে। তাদের দাবি, এবারের ঈদ মার্কেটে ঝড় তুলবে পুষ্পা ও কাঁচা বাদাম থ্রিপিস।
আব্দুর রহিম সুপার মার্কেট বাহাদুর বাজারের আদুরী বস্ত্র বিতাণের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ গুলজার হোসেন ও অন্যান্য দোকানিরা জানায়, তাদের কাছে ভারতীয় কাঁচা বাদাম, পুষ্পা, নাগিন, বিজলি থ্রি-পিস ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে। এখন প্রায় শেষের দিকে, তবে বাংলাদেশি কাাঁচা বাদামও শেষ হতে চলেছে।
ভারতীয় কাঁচা বাদাম, পুষ্পা, নাগিনী থ্রি-পিসের দাম সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। বাংলাদেশি কাঁচা বাদাম দামে সস্তা। ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মেয়েদের দেশি-বিদেশি থ্রি-পিস পওয়া যাচ্ছে বগুড়ার বিপনী বিতান ও শো-রুমে। তবে সবচেয়ে বেশি ঝড় তুলেছে বহুল আলোচিত ‘কাঁচা বাদাম’ ও পুষ্পা থ্রি-পিস’। এ ছাড়া আছে পাকিস্তানি গুলজার, গুল আহমেদ। দেশি বুটিকের চাহিদাও আছে প্রচুর। ভারতের ভরকট থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকায়। ঈদুল ফিতরের এখনও অনেক দিন বাকি। এরই মধ্যে শহরের বিপনী বিতানগুলোত নারী-পুরুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। এবার মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের সালোয়ার কামিজ, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা সবচেয়ে নজর কেড়েছে। তবে শাড়ীর দোকানে তেমন ভিড় নেই, শাড়ির দোকান দেখে মনে হয় মেয়েরা শাড়ি বয়কট করেছে। কেন এ কাঁচা বাদাম থ্রিপিস বিক্রি বেশি, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রতি ঈদে এক একটি পোশাক নামের কারণে বিখ্যাত হয়, চলেও বেশি, এবারের ঈদে ট্রেন্ড কাঁচা বাদাম। পাশাপাশি পুষ্পাও ভালোই চলছে, কাঁচা বাদাম গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ফলে এই নামের পোশাকের প্রতি আগ্রহ আছে। এ থ্রিপিসের কাপড় এবং কালার কম্বিনেশন চমৎকার।’ ঈদ কেনাকাটা করতে আসা পারভীন বলেন, ‘ফেসবুকে প্রথম কাঁচা বাদাম ও পুষ্পা ড্রেস বাজারে আসার খবর দেখি। সম্প্রতি তার এক বান্ধবী কাঁচা বাদাম থ্রি-পিস কিনেছেন। এটা দেখে তিনিও এসেছেন।’ দামে সাশ্রয় হয় বলে একসঙ্গে চারটি ‘কাঁচা বাদাম’ ও ‘দুটি পুষ্পা’ থ্রিপিস কিনেছেন আমেনা খাতুন। তিনি জানান, থ্রিপিসগুলোর কাপড় ভালো, রঙও আকর্ষণীয়, ঈদ উপলক্ষে সবাইকে উপহার দেয়ার জন্য একসঙ্গে এতগুলো থ্রিপিস কিনেছেন তিনি। কেন এই নামকরণ সময়কে উপলক্ষ করে পোশাকের নামকরণ হয় কীভাবে? পাইকারি নাকি খুচরা কোন পর্যায়ে দেয়া হয় নামকরণ? পাইকারি বিক্রেতারা জানান, তারা কখনও কোনো ড্রেসের নাম দেন না, খুচরা মার্কেটে এসব নাম দেয়া হয়। নামের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। থ্রিপিসে কাঁচা বাদাম বা পুষ্পার মতো এমন অদ্ভুত নাম কেন, জানতে চাইলে খুচরা মার্কেটের বিক্রেতারা জানান, কাঁচা বাদাম থ্রিপিসের নামকরণ স্থানীয়ভাবে করা হয়নি। কাপড়ের মালিক, প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান থেকে এই নাম দেয়া হয়েছে। তারা কোনো নামকরণ করেননি। বিক্রি বাড়াতেই এমন নাম দেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তারা বলেন, বিষয়টি তেমন নয়। প্রতি ঈদেই এমন কিছু নামের ড্রেস আনা হয়। নাম শুনে ক্রেতারা আগ্রহী হয়ে ড্রেস দেখেন। কেউ কেউ আবার কেনেনও। তারা বলেন, প্রতিনিয়ত ক্রেতারা নতুন পোশাক খোঁজেন। নতুন নাম দেখলে কেনার আগ্রহ আরও বাড়ে। বর্তমানে কাঁচা বাদাম গানটি বেশ জনপ্রিয়। এটার সঙ্গে মিল রেখে থ্রিপিসের নামকরণ করা হয়েছে। এতে ক্রেতাদের কেনার আগ্রহ বাড়ে।