চট্টগ্রাম নগরীর সর্বশেষ উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ইজারার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন
হোসেন মিন্টুঃ
চট্টগ্রাম নগরীর একটি মাত্র উন্মুক্ত পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ইজারার সিদ্ধান্ত বাতিল করে অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের দাবিতে, শনিবার (২৮মে) বিকেলে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ ওয়াহিদুল আলম মাষ্টারের সভাপতিত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন ৪১ নং ওয়ার্ড আঃলীগের সভাপতি কাউন্সিলর আলহাজ্ব ছালেহ আহমদ চৌধুরী, ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে মোঃ মাইনুল ইসলাম, লোকমান, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সংগঠক মোঃ ওয়াহিদুল আলম চৌধুরী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। চট্টগ্রাম নগরীর সর্বশেষ উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র প্রকৃতির অপার দানে গড়ে উঠা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়ার চক্রান্ত প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, পত্রিকান্তরে আমরা জানতে পেরেছি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের অজুহাত দেখিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের একাংশ প্রাইভেট জোন ঘোষণা করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে।আমরা এই গণবিরোধী, তুঘলকি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রামের সর্বশেষ বিনোদন কেন্দ্র যেখানে মানুষ অবসর সময়ে একটু স্বস্ত্বির নিশ্বাস নিতে পারে। এটি প্রকৃতির দানে গড়ে ওঠা সম্পদ, কোনো ব্যক্তিবিশেষের তৈরি নয়। চট্টগ্রাম শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত যেসব জায়গা ছিল, উন্নয়ন আর আধুনিকায়নের নামে একে একে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। ফয়’স লেক বেসরকারি খাতে ইজারা দিয়ে অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছে।

আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্তে ডিসি হিল বন্ধ হয়ে আছে। সংস্কারের নামে ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতও বেসরকারি খাতে দিয়ে অবরুদ্ধ করে ফেলার এ প্রক্রিয়া আমরা মেনে নিতে পারি না। সিডিএ বলছে, রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় মেটাতে নাকি তারা সমুদ্র সৈকত ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর চেয়ে অপরিণামদর্শী, গণবিরোধী বক্তব্য আর হতে পারে না। সিডিএর কাছে যদি রক্ষণাবেক্ষণের টাকা না থাকে, তাহলে টাকা খরচ করে সৈকতের সংস্কার করল কেন? এভাবে বেসরকারি খাতে সৈকত দিয়ে দিলে সেখানে তো সর্বসাধারণের অবাধ যাতায়াতের অধিকার খর্ব হবে। শুধু বিত্তবানদের জন্য সুযোগ তৈরি হবে, বঞ্চিত হবেন আপামর জনসাধারণ। সিডিএ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, তাদের তো নাগরিকের অধিকার খর্ব করার এখতিয়ার নেই। ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিকরা বলেন, আমরা সিডিএকে বলতে চাই সমুদ্র সৈকত জনগণের সম্পদ। আপনাদের কোন অধিকার নেই এ সম্পদ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার। আপনাদের অধিকার নেই এই সম্পদ বিত্ত্ববানদের হাতে তুলে দেওয়ার, আপনারা এ চক্রান্ত বন্ধ করুন। জনস্বার্থ, জনগণের ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বেসরকারি খাতে ইজারা দেওয়ার গণবিরোধী সিদ্ধান্ত ও রুখে দেওয়ার জন্য আমরা সর্বস্তরের জনতাকে নিয়ে আরো জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলব বলে, জানিয়েছেন বিক্ষোভ রত দোকানীরা।

দৈনিক নব দেশ বার্তা

নিউজটি শেয়ার করুনঃ