বৃষ্টির পানিতে চট্টগ্রামের নিম্মাঞ্চল জলাবদ্ধতা সৃষ্টি আজও থেমে থেমে বৃষ্টি
হোসেন বাবলা,চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম আজও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। রোববার (১৯জুন) সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ১৪৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আর এই বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীর বাদুরতলা, আগ্রাবাদ, শুলকবহর, দুই নম্বর গেইট, মুরাদপুর, আতুরার ডিপো, আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতাল, বন্দর-ইপিজেড ও পতেঙ্গা এলাকা সহ নগরীর নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। গতকাল (১৯ জুন) রোববার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও দুপুরের পর বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়। আর সোমবার (২০জুন) ভোর ৬টা পর্যন্ত একটানা বৃষ্টিতে পানি জমে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত শহিদুল সুমন বলেন, দুপুরের পরে ভারী বৃষ্টিতে আগ্রাবাদের কিছু সড়কে পানি উঠেছে।অফিস থেকে হাঁটু পরিমাণ পানি মাড়িয়ে গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়েছি। এদিকে বহদ্দারহাট আরাকান সড়কেও হাঁটু পরিমাণ পানি উঠেছে। বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা সারোয়ার কামাল বলেন, বিকেলে কাজে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় কীভাবে যাব চিন্তা করছি। “পানি উঠে গেলে ২৫ টাকার রিকশা ভাড়া ৫০ টাকা দিতে হয়”। পানি উঠেছে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের পুরাতন ভবনের নিচতলা ও আশেপাশের এলাকায়। নিচতলায় আছে শিশু ওয়ার্ড, অভ্যর্থনা কক্ষ, বহির্বিভাগ ও প্রশাসনিক বিভাগ। এসব সেবা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিলেও আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়েছেন পুরাতন হাসপাতাল দিয়ে চলাচল করা রোগী ও স্বজনরা। তবে হাসপাতালের নিচতলার কার্যক্রম নতুন ভবনে নিয়ে যাওয়ায় পানিতে তেমন সমস্যা হচ্ছে না বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক নুরুল হক।

তিনি বলেন, হাসপাতালের পুরাতন ভবনের নিচতলায় এখন কোনো রোগী নেই। নিচতলার সব কার্যক্রম নতুন ভবনে শিফট করা হয়েছে, নিচতলায় কিছু পানি থাকে। সেটি আমাদের কাজে তেমন প্রভাব ফেলে না। আউটডোর থেকে সবকিছু শিফট করা হয়েছে, তাই পানির তেমন প্রভাব নেই। আগে যেমন কষ্ট হতো, এখন পানিতে তেমন কষ্ট করতে হয় না। এছাড়া হাসপাতালের পাশের এলাকা ৩৬নং ওয়ার্ডের গোসাইলডাঙ্গা-টান্ডা মিয়া পাড়া, নাছির খাল এলাকায় জোয়ার ও প্রবল বৃষ্টির পানি জমে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা গেছে, যা সোমবার দুপুর পর্যন্ত বিধ্যমান। বন্দেরর সল্টগোলা ক্রসিং-ঈশান মিস্ত্রিপাড়া, এছাক সওদাগর পাড়া, ধুমপাড়া, আনন্দ বাজার এলাকা, মুন্সিপাড়া, ইপিজেডের নিউ মুরিং, নয়াহাট, তালতলা, সিমেন্ট ক্রসিং (আকমল আলী রোড), নারিকেল তলা, নুরগনি পাড়া, হিন্দুপাড়া, নুতন সাইটপাড়া, পুরাতন সাইটপাড়া আংশিক, পতেঙ্গার খেজুর তলা, মুসলিমাবাদ জেলে পাড়া, কাটগড় (পুরাতন কন্ট্রোল মোড়), মাইজপাড়া-দাইয়া পাড়া, বিজয় নগর, হাদিপাড়ার আংশিক এলাকায় বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জলাবদ্ধা দেখা যাই, তবে বৃষ্টি কমার সাথে সাথে পানি কমতে শুরু করে।চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামে গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সোমবার ভোর ৬ঠা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৭ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
সোমবারও চট্টগ্রামে বৃষ্টি হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।এছাড়া আকাশ মেঘলা থেকে কালো-ভারী আকার ও দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ