নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা শিক্ষকে
নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা শিক্ষকে
সাভার থানা প্রতিনিধিঃ
প্রভাষক উৎপল কুমার সরকারের মৃত্যুর খবর উল্লাপাড়া উপজেলার লাহিড়ী মোহনপুর ইউনিয়নের এলংজানী গ্রামে তার বাড়িতে পৌঁছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। উৎপলের মা বৃদ্ধ গীতা রানীসহ পরিবারের স্বজন ও প্রতিবেশীদের গগন বিদারী কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে সেখানকার বাতাস। কাঁদতে কাঁদতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন মা। অকালে সন্তান হারানোর শোক যেন কোনোভাবেই সামাল দিতে পারছেননা গীতা রানী। উৎপলকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন উৎপলের স্বজন ও স্থানীয়রা।
উৎপলের ছোট ভাই বৌ মলি রানী সরকার জানান, উৎপল কুমারের মরদেহ ঢাকার সাভার থেকে রাত ৯টার দিকে গ্রামে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। রাতেই পার্শ্ববর্তী লাহিড়ী মোহনপুর শশ্মানে শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মলি রানী তার ভাশুরের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের পরিবারের পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের শাসন করায় যদি শিক্ষককে এভাবে করুণ মৃত্যুবরণ করতে হয় তাহলে দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আর শৃঙ্খলা থাকবে না। নষ্ট হবে শিক্ষার পরিবেশ। প্রসঙ্গত, উৎপল উল্লাপাড়া উপজেলার এলংজানী গ্রামের মৃত অজিত সরকারের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে ১০ বছর ধরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল ও কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে চাকরি করতেন। উৎপল প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবে বিভিন্ন সময় উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীদের শাসন ও বিচার করতেন। গত শনিবার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের ফুটবল খেলা হচ্ছিলো। প্রভাষক উৎপল মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এসময় ওই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে উৎপলকে বেধড়ক পেটায়। গুরুতর অবস্থায় তাকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।