হায় স্বাধীনতা !
                ……..সৈয়দুল ইসলাম
২৫শে মার্চ ভয়াবহ এক কালো রাত
রাতের আঁধারে বর্বর পাকিস্তানি বাংলা আক্রমন করল।
চারদিকে শুধু গুলির আওয়াজ,
আকাশ বাতাস ধোঁয়াচ্ছন্ন, কিছুই দেখা যাচ্ছিল না
পাকসেনাদের নির্মম নিষ্ঠুর নির্যাতনে সবুজ শ্যামল প্রকৃতি দূষিত হয়ে পড়েছিল।
পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি মানেই তো
শাসন- শোষন, লাঞ্ছনা- বঞ্চনা
বীর বাঙালি চায় মুক্তি
চায় স্বাধীনতা—
তাই বীরের জাতি মাটি ও মানুষের কথা ভেবে ঘরে বসে থাকতে পারেনি।
প্রতিশোধের আগুন সেদিন বুকে দানা বেঁধেছিল,
মুক্ত হাওয়ায় একটু শান্তির নিঃশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকতে ধরেছিল জীবন বাজি।
মায়ের আশির্বাদ আর বুক ভরা সাহস নিয়ে
ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মরণপণ যুদ্ধে।
এই যুদ্ধ ছিল ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখা রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধ।
সূক্ষ্ম চিন্তা আর তীক্ষ্ম বুদ্ধিই ছিল বীর বাঙালির একমাত্র হাতিয়ার,
পাকসেনাদের বুলেট, মেশিনগান বাংলার দামাল ছেলেদের রুখতে পারেনি।
বীরসেনাদের ধৈর্য্য এবং বুদ্ধিমত্তার কাছে নয়মাস যুদ্ধ শেষে পাকবাহিনী নত শীরে আত্মসমর্পণ করলো।
শত্রু মুক্ত হলো দেশের মাটি,
আমরা হলাম স্বাধীন
পেলাম রক্তাক্ত একটি স্বধীন পতাকা।
কিন্তু, আজ ভাবতেই কষ্ট হয় আমরা কী আসলেই স্বাধীন?
না, আমরা স্বাধীন নই
মুক্ত হাওয়ায় মুক্ত মনে ঘুরে বেড়াতে পারি না,
কীসের স্বাধীনতা?
মা-বোনেরা নিরাপদে পথ চলতে পারে না,
সুযোগ পেলেই মানুষরূপী হিংস্র জানোয়াররা দেহের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তাদের ইচ্ছে দেহটারে ছিঁড়েপিড়ে খাওয়া,
অপরাধীরা রাস্তা কিংবা হাটে মাথা উঁচিয়ে চলে।
এই কী স্বাধীন দেশ?
আজ দেখি নির্দোষীরা অপরাধের বোঝা মাথায় নিয়ে জেলে পঁচে মরে।
ভুয়া মুক্তিযোদ্বা ভাতা পেয়ে বিলাস বহুল অট্টালিকায় থাকে।
কিন্তু রক্ত ঝরানো বীর মুক্তিযোদ্ধারা কী পেল?
না খেয়ে ফুটপাতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে পড়ে থাকে,
বাংলার সোনার ছেলেরা বুঝেনি সেদিন,
বুকের তাজা রক্ত ঢেলে রাজপথ রাঙিয়ে বোধহয় ভুল করেছিল।
বৃথা সংগ্রাম করেছিল,
হায় বীর, হায় স্বাধীনতা !
দৈনিক নব দেশ বার্তা / কবিতা

নিউজটি শেয়ার করুনঃ