ধর্ম যার যার উৎসব সবার

শ্রীঃ মিশুক চন্দ্র ভুঁইয়া, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলা থানাধীন পুলিশের পক্ষ থেকে গলাচিপা উপজেলার সকল ধর্ম পেশার মানুষকে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ওসি মোঃ আনোয়ার হোসেন শওকত,
ওসি তদন্ত মোঃ আতিকুল রহমান।

এক শুভেচ্ছা বার্তায় জানান, দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষার পর আমাদের সবচেয়ে প্রিয় এবং অন্তরের উৎসব দূর্গা পূজা বা দুর্গোৎসব একেবারে দোর গোড়ায় চলে এসেছে। প্রতি বছরই দূর্গা মায়ের মর্ত্যধামে ফেরার অনন্দে মেতে ওঠে এই ধরিত্রী বিশেষ করে বাঙালিদের মধ্যে এই পুজোর উন্মাদনা একটু বেশিই থাকে। দূর্গা পূজা মানেই ঢাকের আওয়াজ, প্যান্ডেলের হৈহুল্লোড়।

দুর্গোৎসবের এই কটা দিন আমরা বিশেষ আনন্দ ও উৎসাহের সাথে দূর্গা মায়ের আরাধনা করে, পরিবারের সদস্য ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডায় একে অপরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকি।

বিভিন্ন সময় চাকরি ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলায় চাকরি করেছি। এবার মহান সৃষ্টি কর্তার আশীর্বাদে বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা থানার পুলিশ আপনাদের কে সকলের সহযোগিতা ও ভালোবাসা নিয়ে দূর্গা উৎসব উদযাপন করতে চাই।

ওসি তদন্ত শুভেচ্ছা বার্তায় আরো বলেন, আমার এই শুভেচ্ছা বার্তার মাধ্যমে সবার কাছে বিশেষ অনুরোধ থাকবে। সরকারের নিয়মনীতি ও আইন শৃঙ্খলা মেনে সবাই দূর্গা উৎসব উদযাপন করবেন। বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে গলাচিপা থানার আওতাধীন সকল পূজা মন্ডবে আমাদের কঠোর নজরদারি থাকবে।

আপনাদের সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে গলাচিপা উপজেলা থানা পুলিশ। সবাইকে আবারো শারদীয় দূর্গা পূজার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলা থানাধীন শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী উদযাপিত হয়েছে গতকাল রবিবার আজ মহাষ্টমী বৃষ্টি উপেক্ষা করে মন্ডপে মন্ডপে ভক্তেদের ভীড় গতকাল ভোরে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, ঢাক-ঢোল কাঁসর বাজিয়ে, চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে সপ্তমীবিহিত পূজা হয়।

আজ সোমবার মহাষ্টমী। এদিন সকালে দুর্গা দেবীর মহাষ্টমীবিহিত পূজা, ব্রতোপবাস ও পুষ্পাঞ্জলি এবং মহাষ্টমীর আকর্ষণ কুমারী পূজা হবে। গতকাল মহাসপ্তমীর দিনে সকাল থেকে গলাচিপা উপজেলা মন্দিরে পূজামন্ডপ গুলোতে মানুষের ঢল নামে।
বিকেলের দিকে দর্শনার্থী বাড়তে থাকে।

পটুয়াখালী জেলায় প্রায় ৪০ টি পূজামণ্ডপে ঢাকের বাদ্য, চণ্ডী ও মন্ত্রপাঠ, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে মুখর ছিল। আজ সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হওয়ায় অনেকেরই ধারনা ভক্তদের উপস্থিতি কম হওয়ার শংকায় রয়েছে অনেকেই, বেলা বাড়ার সাথে সাথে মহাষ্টমীতে দর্শনার্থী আরও বাড়বে বলে মনে করছেন আয়োজকরা। আগামীকাল মহানবমী ও বুধবার বিজয়া দশমীর দিনে প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনের দুর্গোৎসব শেষ হবে বলে জানান।

শাস্ত্রমতে, দেবীকে আসন, বস্ত্র, পুষ্পমাল্য এ ধরনের ষোল উপাদান (ষোড়শ উপাচার) দিয়ে মহাঅষ্টমীর পূজা-অর্চনা করা হয়। প্রত্যুষে ত্রিনয়নী দেবীর চক্ষুদান করা হয়। পূজা-অর্চনা শেষে দেবীর কৃপালাভের আশায় তার চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেন ভক্তরা।

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা ইউনিয়নের আজ বেলা ১১টায় মহাসমারোহে কুমারী পূজা হবে। কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ কল্পনা করে তাকে দেবী জ্ঞানে পূজা করবেন ভক্তরা, হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, সাধারণত ১ থেকে ১৬ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা ব্রাহ্মণ বা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কুমারী নারীকে দেবী জ্ঞানে পূজা করা হয়। শ্রীরাম কৃষ্ণের কথামতে, কুমারী পূজার বিষয়ে বলা হয়েছে, শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর রূপ বেশি প্রকাশ পায় এবং মাতৃরূপ উপলব্ধি করাই কুমারী পূজার উদ্দেশ্য।

শাস্ত্রমতে, এক বছর বয়সী কন্যাকে সন্ধ্যা, দুইয়ে সরস্বতী, তিনে ত্রিধামূর্তি, চারে কলিকা, পাঁচে সুভাগা, ছয়ে উমা, সাতে মালনী, আটে কুজ্বিকা, নয়ে কালসন্দর্ভা, দশে অপরাজিতা, এগারোয় রুদ্রানী, বারোয় ভৈরবী, তেরোয় মহালক্ষ্মী, চোদ্দতে পীঠ নায়িকা, পনেরোতে ক্ষেত্রজ্ঞা এবং ষোলো বছরে তাকে অন্নদা নামে অভিহিত করা হয়।

নির্বাচিত কুমারীকে মহাষ্টমীর দিন ভোরে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। তাকে সাজিয়ে কপালে সিঁদুর, পায়ে আলতা ও হাতে ফুল দেওয়া হয়। কুমারীকে সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোড়শোপাচারে (ষোলো উপাদান) দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। এ সময় চারদিকে শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বোল, উলুধ্বনি আর দেবী স্তুতিতে মুখর হয়ে ওঠে।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ