বাউফলে ভুয়া চক্ষু ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় চক্ষু হারানোর পথে রোগী জনমনে ক্ষোভ

শ্রীঃ মিশুক চন্দ্র ভুঁইয়া, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালীর বাউফলে বাউফল অন্ধ কল্যাণ চক্ষু হাসপাতালের এক ভুয়া চক্ষু ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার বলি হয়ে দিনরাত চোখের যন্ত্রণা নিয়ে কাতরানো সহ চক্ষু দুটো হারানোর পথে বসেছে মোঃ জাকির হোসেন নামে এক রোগী। এতে পরিবার থেকে শুরু করে জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

ওই চক্ষু ডাক্তারের নাম এম এইচ কবির। তিনি বাউফল পৌরশহরের গোলাবাড়ি ব্রীজ সংলগ্ন বাউফল অন্ধ কল্যাণ চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক। উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডভূক্ত দ্বিপাশা গ্রামের বাসিন্দা মৃত সানু হাওলাদারের ছেলে।

ওই চক্ষু ডাক্তারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে ভুক্তভোগী জাকির হোসেন জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার চোখ দুটো লালচে ভাব হয়ে আছে। ক্রমেই লালচে ভাব বেশি দেখা দিলে ওইদিনই পরিবারের পরামর্শে বিকেল ৫টার দিকে চক্ষু ডাক্তার এম এইচ কবিরকে দেখাই। তিনি চোখ দেখে ৩টা চোখের ড্রপ দেন। তা ব্যবহার করা মাত্রই চোখ আমার যন্ত্রণা সহ জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যায়। যন্ত্রণায় টিকতে না পেরে হাসপাতাল গিয়ে পুনরায় ওই ডাক্তারকে দেখাই।

তিনি একটা ড্রপ বাদ দিয়ে ওই সব ড্রপের সাথে আরও একটা ড্রপ ব্যবহার করতে দেন এবং যন্ত্রণা কমানোর জন্য ব্যথার ঔষধ দেন। কিন্তু ঔষধে কোনও কাজ হচ্ছে না বরং দিনরাত চোখের যন্ত্রণায় ছটফট করছি। এদিকে চোখ দিয়ে পানিও পড়ছে, চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। তাই দ্রুত পরিবারের লোকজন পটুয়াখালী বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এদিকে জাকির হোসেনের স্ত্রী জানান, তখন চক্ষু ডাক্তার চোখ দেখে জানান যে সম্পূর্ণ ভুল চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। যার ফলে চোখ দুটো বাদ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এবং ডাক্তার এম এইচ কবিরের মোবাইল নম্বর নিয়ে তাকে ব্যাপক গালমন্দ করে বলেন যা পারবেন না তা কেন করেছেন। এই রোগীর কি অবস্থা হবে, আপনার বিরুদ্ধে সিভিল সার্জনের কাছে অভিযোগ দেয়া হবে, তখন তিনি এম এইচ কবির বলেন আমার ভুল হয়ে গেছে স্যার আপনি একটু দেখেন প্লিজ।

তখন রাগ করে ফোন কেটে দিয়ে সাময়িক ভাবে ভালো রাখতে কিছু ঔষধ দিয়ে দ্রুত ঢাকা গিয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞ বড় ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেন। আমার স্বামী দিনমজুর, এখন কিভাবে সংসার চালাব, কিভাবে বড় ডাক্তার দেখাবো কিছুই মাথায় কাজ করছে না। আমার স্বামীর চোখের দায় সম্পূর্ণ ওই এম এইচ কবিরের নিতে হবে। ভুয়া ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার বিচার দাবি করছি।

হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট নাম না বলা শর্তে জানান, চক্ষু ডাক্তার এম এইচ কবিরের চিকিৎসা ভালো না যা একাধিক অভিযোগ শুনা যায়। এনিয়ে অনেকের মাঝে দেখেছি ক্ষোভ ও অসন্তোষ।

সরেজমিনে চক্ষু ডাক্তার এম এইচ কবির বলেন, আসলেই আমার ভুল হয়ে গেছে। এখন কি করতে পারি বলুন, কোনও নিউজ করেননা আমি তাহলে বিপদে পড়ে যাবো।

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএস প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, চক্ষু ডাক্তারদের একটি করে লিষ্ট দেওয়া আছে যে সে কি কি রোগের চিকিৎসা করতে পারবে। এব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, এরকম ভুল চিকিৎসা দিয়ে থাকলে অভিযোগের ভিত্তিতে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ