সম্প্রীতিপূর্ণ মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় মাইজভান্ডারী মহাত্মাদের অবদান অনস্বীকার্য

মহিউদ্দিন বাপ্পি,স্টাফ রিপোর্টারঃ

গাউসুল আযম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (ক.) এর ১১৭ তম উরস শরিফ উপলক্ষে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (ক.) ট্রাস্টের ১২ দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর স্টেডিয়ামস্থ জিমনেসিয়াম মাঠে পঞ্চদশ শিশু-কিশোর সমাবেশ গত ১৩ জানুয়ারি শুক্রবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।

শিশু-কিশোর সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ ওয়াইএম জাফর। উদ্বোধক ছিলেন সাবেক সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন। প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজিব রঞ্জন। তিনি বলেন, উপমহাদেশসহ সারা বিশ্বে সূফি সাধক মনীষীগণই ইসলামের শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। সকল ধর্মের নির্যাসই হচ্ছে মানুষ, মানবতা, সম্প্রীতি, শান্তি ও সহাবস্থান। সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতিবোধ গড়ে তুলতে পারলে ধর্মের নামে উগ্রতা ও হানাহানির পথ রুদ্ধ করা সহজ হবে। সম্প্রীতিপূর্ণ মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় মাইজভান্ডারী মহাত্মাদের অবদান অনস্বীকার্য।

রাজিব রঞ্জন বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চমৎকার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মাইজভান্ডারী একাডেমির শিশু-কিশোর সমাবেশ আলোকিত পরিচ্ছন মানুষ গড়ে তুলতে অবদান রাখবে। সমাবেশে শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী (ক.) ট্রাস্টের ম্যানেজিং ট্রাস্টি ও মাইজভান্ডার শরিফ গাউসিয়া হক মনজিলের সাজ্জাদানশিন রাহবারে আলম হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান (মজিআ) এর লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মাইজভান্ডারী একাডেমির সদস্য সচিব অধ্যাপক মুহাম্মদ জহুর উল আলম।

হাজারো শিশু-কিশোরসহ অভিভাবক ও সর্বস্তরের মানুষ শিশু-কিশোর সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। শিশু-কিশোর সমাবেশ উপলক্ষে দেলা ময়না বিজ্ঞান মেলা, ট্রাফিক সচেতনতা, পিঠা উৎসব, স্কাউটসহ প্রায় শতাধিক স্টল বসে। অতিথিগণ স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন। শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাসমুখর অংশগ্রহণে শিশু-কিশোর উৎসব বেশ প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে অতিথিরা পুরস্কার, সনদ ও ক্রেস্ট বিতরণ করেন।

উদ্বোধক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, শিশুরা পবিত্রতা ও শুভ্রতার প্রতীক। তারা অনুকরণপ্রিয়, তারা যা দেখে তাই তাদের মনে রেখাপাত করে। তাই শিশুদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা সততা, নৈতিকতা ও মনুষ্যত্বের গুণ রপ্ত করতে পারে। মাইজভান্ডারী মহাত্মাদের চর্চিত মানবিকতা ও পরার্থপরতার দর্শন শিশু-কিশোরদের মাঝে সার্থকভাবে তুলে ধরতে হবে।

লিখিত উপস্থাপিত বক্তব্যে, হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান (মজিআ) বলেন, আজকের অব্বয়গ্রস্ততার ক্রান্তিকালে ঐশ প্রেম, মানবপ্রেম, ধর্মঐক্য ও বিচারসাম্য প্রতিষ্ঠায় জোর দিতে হবে। গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী (ক.) সহ মাইজভান্ডারী মহাত্মাদের জীবনাদর্শ বর্তমান প্রজম্মের মাঝে তুলে ধরা হলে তারা আলোকিত জীবনের দিশা লাভ করবে। শিশু-কিশোর সমাবেশে বিশেষ অতিথি ও আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় শিশু কর্মকতা মুহাম্মদ মোসলেহ উদ্দীন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক বোরহান উদ্দীন মুহাম্মদ আবু আহসান, লায়ন্স গভর্নর শামসুদ্দিন আহমদ সিদ্দিকি, চট্টগ্রাম জাদুঘরের উপ-পরিচালক আতাউর রহমান, অধ্যাপক মীর তরিকুল আলম, মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের উপসচিব মুহাম্মদ বেলাল হোসেন, লায়ন দিদারুল আলম চৌধুরী, এইচ এম রাশেদ খান, এম মকসুদুর রহমান হাসনু, মুহাম্মদ আশরাফুজ্জামান আশরাফ, মোহাম্মদ আবুল মনসুর, নুরুল করিম নুরু, আশরাফ উদ্দীন সিদ্দিকি, মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন ও শামসুল ইসলাম প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ