ডবলমুরিং মডেল থানার অভিযানে পেশাদার সিঁধেল চোর গ্রেফতার ও চোরাই মালামাল উদ্ধার

কামাল উদ্দিন,চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ

সিএমপি ডবলমুরিং মডেল থানার ১১ অক্টোবর রাত অনুমান ৯.০০ টায় এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য গৃহকত্রী মনোয়ারা বেগম বেবি ডবলমুরিং থানাধীন মনছুরাবাদ এলাকার ৪র্থ তলাস্হ তাঁর নিজ ভাড়াবাসা তালাবদ্ধ করে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যান। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে তিনি রাত অনুমান ১১.০০ ঘটিকায় বাসায় ফিরে এসে দরজার তালা খুলে বাসায় প্রবেশ করতে গেলে গৃহকত্রী বুঝতে পারেন দরজাটি বাসার ভিতর থেকে লাগানো। তিনি দরজায় ধাক্কা দিয়েও দরজা খুলতে ব্যর্থ হয়ে ৩য় তলায় অবস্হিত তাঁর স্বজনকে ডাকেন। স্বজনরা এসে স্বজোরে ধাক্কা দিলে এক পর্যায়ে দরজার ভিতর থেকে লাগানো ছিটকানি ভেঙ্গে গেলে দরজা খুলে যায়। ভিতরে প্রবেশ করে তাঁরা দেখতে পান পুরো ঘরের কাপড়-চোপড় এলোমেলোভাবে পুরোঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ঘরে থাকা আলমারি, ওয়্যার ড্রোব খোলা। এক পর্যায়ে দেখা যায় একটি জানালার গ্রিলের কিছু অংশ নেই। বুঝতে আর বাকী নেই জানালার গ্রিলের এই কাটা অংশ দিয়ে চোর প্রবেশ করে ঘরের মালামাল চুরি করে নিয়ে কাটা গ্রিল দিয়েই বের হয়ে গেছে।

সংবাদ পেয়ে ডবলমুরিং মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্হলে উপস্হিত হয়ে তদন্ত শুরু করে। ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে কোন সিসিটিভি ক্যামেরা ছিলো না। কিন্তু আশেপাশের অন্যান্য ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করতে নেমে পড়ে ডবলমুরিং মডেল থানার কয়েকজন কর্মকর্তা। সংগ্রহ করে কয়েকজন সন্দেহজনক গতিবিধি সন্দিগ্ধ ব্যক্তির সিসিটিভি ফুটেজ।ফুটেজগুলোর বিশ্লেষণ করে চিহ্নিত করা হয় ঘটনায় জড়িত চোর চক্রকে।

ডবলমুরিং জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মুকুর চাকমা এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে, এসআই মোঃ ইমান হোসেন এর নেতৃত্বে একটি চৌকস দল সিঁধেল চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য মোঃ জুয়েল, মোঃ রুবেলকে ঘটনার পরদিন ১২ অক্টোবর গ্রেফতার করেন। তাদের কাছ থেকে চোরাই-কৃত ১টি ল্যাপটপ, ১টি ট্যাব, ২টি মোবাইল ফোন, ১টি চুলের আয়রন মেশিন, চুরির জন্য গ্রিল কাটায় ব্যবহৃত ১টি রেঞ্চ এবং ঘটনার সময় জুয়েলের গায়ে পরিহিত টি-শার্ট উদ্ধার করেন।

গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে তারা প্রথমে ভবনের মূল সিঁড়ি বেয়ে ভবনের বিভিন্ন তলায় গিয়ে দেখে কোন ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ কিনা। বিভিন্ন তলা পরিদর্শন করে তারা দেখতে পান ৪র্থ তলার ফ্ল্যাটটির দরজায় তালা লাগানো। বাসার ভিতরে কোন ব্যাক্তি আছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য কলিং বেল চাপেন। কিন্তু ভিতর থেকে সাড়া না পেয়ে তারা নিশ্চিত হয় ভিতরে কেউ নেই। দরজার তালা ভেঙে প্রবেশ করলে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের লোকজনের কাছে ধরা পড়ার আশংকায় তারা ঠিক করে ফ্ল্যাটের সামনে দিয়ে নয়, বরং পিছনের জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করাই অধিক নিরাপদ। এর প্রেক্ষিতে তারা পাশাপাশি ঘেঁষে থাকা দুই ভবনের দেয়াল বেয়ে উঠে জানালার গ্রিল কেটে এই ঘরে প্রবেশ করে চুরির ঘটনা ঘটায়।

গ্রেফতারকৃত মোঃ জুয়েল এর বিরুদ্ধে শরিয়তপুরের গোসাইরহাট থানা এবং সিএমপির ডবলমুরিং মডেল থানায় সিঁধেল চুরির দুটি মামলা রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ