সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন জাতিকে মর্যাদাবান ও সমৃদ্ধ করতে পারে

হোসেন মিন্টুঃ

চট্টগ্রাম ২০ ফেব্রুয়ারি ২৪, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ৫২’এর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে যে অসাম্প্রদায়িক ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক চেতনার বীজ ভপিত হয় তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত লড়াই- সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক বিজয় বাঙালি জাতিসত্তার স্বাধীন স্বদেশ ভূমি বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। এই বাংলাদেশ সারা বিশ্বের মুক্তিকামী জনতার প্রেরণার উৎস এবং মুক্তিকামী মানুষের স্বাধীন অস্তিত্ব রক্ষার ঠিকানা। তিনি আজ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরীর থিয়েটার ইনষ্টিটিউট মিলনায়তনে ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, দ্বীজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে সাম্প্রদায়িক ও অবৈজ্ঞানিক ধারণায় প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান কায়েম হবার পরপরই বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির উপর পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠি হিংশ্র থাবা দেয়। তখই বঙ্গবন্ধু বুঝে গিয়েছিলেন পাকিস্তানি রাষ্ট্র কাঠামোয় কখনো দেশের সংখ্যাঘরিষ্ট মানুষ বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তখন থেকেই তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নজাল রচনা করতে থাকেন এবং বহু প্রতিকূলতার মধ্যে বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করে যে স্বাধীনতা তিনি এনে দেন তাকে আবারও আঘাত ও ধ্বংস করার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র চলছে। আওয়ামী লীগ এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে জানে, করেছে এবং আগামীতেও তা মোকাবেলা করার হিম্মত রাখে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, ভাষা আন্দোলন শুধু মাত্র ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্যেই সিমাবদ্ধ ছিলনা। মুখের ভাষায় কথা বলা একটি জন্মগত অধিকার। আর ভাষা আন্দোলন ছিল বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের চূড়ান্ত লড়াই-সংগ্রাম। কিন্তু দু:খের সাথে বলতে হয় এই লড়াইয়ে বাঙালি জিতলেও বিগত ৬৮ বছর পরও সর্বক্ষেত্রে রাষ্ট্রভাষা বাংলার প্রচলন হয়নি। এটা আমাদের জাতিগত হীনমন্যতা ও বিকৃত মানসিকতার একটি বিরুপ প্রতিক্রিয়া। কারণ এখনো দেখি আমরা অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানে বুঝে হউক বা না বুঝে হউক মাতৃভাষার পরিবর্তে ইংরেজী ও বিদেশী ভাষা ব্যবহার করি। এটা নিজের জাতিসত্তা ও সাতন্ত্রকে অমর্যাদা ও অবমাননা করার সামিল। তিনি আরো বলেন, যে সকল দেশ উন্নত ও অগ্রসর সেদেশের মানুষ রাষ্ট্র সমাজ নিজেদের মাতৃভাষা এবং দেশীয় রীতিনীতি ও আইনকানুনকে মর্যাদা দেয় ও মেনে চলে। একারণে তারা পৃথিবীতে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পেরেছে। তাই এই কারণে আমাদেরকেও আত্মমর্যাদাশীল হতে হবে। নিজের ভাষা সংস্কৃতিক, সামাজিক রীতিনীতিকে মর্যাদা ও সমীহ করে অন্যান্য আন্তর্জাতিক ভাষা রপ্ত ও চর্চা করে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এ.কে.এম বেলায়েত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, তথ্য গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, কার্য নির্বাহী সদস্য মোহাব্বত আলী খান, থানা আওয়ামী লীগের সাহাব উদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ ইলিয়াস, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের রুহুল আমিন তপন, আব্দুল মালেক, ফারুক আহমেদ, দিদারুল আলম মাসুম, লায়ন আশিষ কুমার ভট্টাচার্য্য, ইলিয়াস সরকার। সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হাসান মাহমুদ সমশের, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, ডা: ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য আব্দুল লফিত টিপু, হাজী রোটারীয়ান মোহাম্মদ ইলিয়াস, হাজী বেলাল আহমদ, থানা আওয়ামী লীগের আনসারুল হক, অধ্যাপক আসলাম হোসেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সৈয়দ মোহাম্মদ জাকারিয়া, জামাল হোসেন, আব্দুল আজিজ মোল্লা, মোহাম্মদ ইকবাল হাসান, কাজী রাশেদ আলী জাহাঙ্গীর, হাজী আলী বক্স, নুরুল আজিম নুরু, মাহাবুব কোম্পানী, গোলাম মোহাম্মদ জুবায়ের, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেখ সরওয়ারদি, তানভীর আহমদ, হাজী মোহাম্মদ হাসান, আব্দুর রহিম, জাফরুল হায়দার সবুজ, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, শাহেদ ইকবাল বাবু প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ