চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগ’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন
হোসেন মিন্টুঃ
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের কমিটির দুটি শীর্ষ পদে শেষ পর্যন্ত নাম ঘোষণা করা হয়ইনি। দক্ষিণ জেলার মতো এটাও কেন্দ্র থেকে পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। রোববার যুবলীগের সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে পদপ্রত্যাশীরা সমঝোতা বা একমত হতে না পারায় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এই ঘোষণা দেন। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হাটহাজারী কলেজে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় অধিবেশনে ২৪৬ কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সভাপতি পদে ৭ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়। পরে শেখ ফজলে শামস পরশ তাঁদের একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সাক্ষাৎকারে বয়স, পেশা, অভিজ্ঞতা ও পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন।

এরপর তিনি দুই শীর্ষ পদের প্রত্যাশীদের সমঝোতা করে আসতে বলেন। কিন্তু কেউ তাঁদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে সম্মত না হওয়ায় ঢাকা থেকে কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় হাটহাজারীর পার্বত্য উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বেলুন উড়িয়ে উত্তর জেলা যুবলীগের সম্মেলন উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। এ সময় পদ-পদবির জন্য তাঁদের কোনো উপঢৌকন দিতে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান। শেখ ফজলে শামস বলেন, সাংগঠনিক পদ ব্যক্তিগত পকেট ভারী করার জন্য নয়। অর্থের বিনিময়ে পদ দেওয়া হবে না। অবৈধ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে যেন যুবলীগকে ব্যবহার করা না হয়। যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘একটা শুদ্ধি অভিযানের মধ্য দিয়ে আমাদের কমিটি এসেছে। আপনারা মূল্যায়ন করবেন, আমরা মনমানসিকতায় পরিবর্তন আনতে পেরেছি কি না। যুবলীগ মানবিক যুবলীগে পরিণত হয়েছে কি না।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যার অর্জন ও সফলতা জনগণের মধ্যে তুলে ধরতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। এক দিকে আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার নেতৃত্ব দেবে যুবলীগ, অন্যদিকে লড়াই-সংগ্রাম জারি রাখতে হবে। ত্যাগীদের কমিটিতে স্থান দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ ফজলে শামস বলেন, দলের মধ্যে ভুঁইফোড়দের রামরাজত্ব বন্ধ করতে হবে। ত্যাগী ও জেল-জুলুম সহ্য করা নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত দেশ-জাতির কল্যাণ চায় না। সম্মেলন থেকে যে নেতৃত্ব বের হয়ে আসবে, তাঁদের কাফনের কাপড় মাথায় নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে ২০০১-২০০৬ সালের চেয়ে বেশি তাণ্ডব চালাবে। তাই উত্তর জেলার সব আসনে জিতে এসে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। কাওমি আলেমদের উদ্দেশে মাইনুল বলেন, ‘আপনাদের বিএনপি-জামায়াত ব্যবহার করছে, তাদের পেছন পেছন ঘুরছেন। সনদ দেবে বলে বারবার ব্যবহার করেছে, কিন্তু সনদ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।’ মাইনুল হোসেন খান আরও বলেন, বিপথগামীদের যুবলীগে স্থান হবে না, যোগ্য নেতৃত্বের হাতে যুবলীগের দায়িত্ব দেওয়া হবে। যাঁরা আগামী দিনের সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারবেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন। ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য দেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আতাউর রহমান, সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান, দিদারুল আলম ও খাদিজাতুল আনোয়ার, যুবলীগ চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ ফজলে নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জয়দেব নন্দী, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আদিত্য নন্দী ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ। প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এস এম আল মামুন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল আলম। দক্ষিণ জেলা ও উত্তর জেলার পর আজ নগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ