“দাম কমাও জান বাঁচাও” দাবিতে সিপিবি চট্টগ্রামের বিক্ষোভ সমাবেশ
আরজুন নাহারঃ
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে শুক্রবার (৩জুন) বিকাল ৪ টায় নগরীর সিনেমা প্যালেস চত্ত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘দাম কমাও, জান বাঁচাও, ভোটাধিকার দাও’ এই শ্লোগানে সিপিবি’র দাবী দিবসের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা’র সভাপতিত্বে ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য উত্তম চৌধুরী, মছি উদ-দৌলা প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাজারে দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতিতে দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। দেশে আড়াই কোটি মানুষ বেকার ও তিন কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। শ্রমিক ও কর্মজীবী মানুষদের মজুরি-বেতনও বাড়েনি। মানুষের ন্যূনতম বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু প্রয়োজন সেই ক্রয় ক্ষমতাও তার নাগালের বাইরে চলে গেছে। এ অবস্থায় সরকার দরিদ্র মানুষের যন্ত্রণা লাঘব না করে উল্টো গ্যাস, জ্বালানি তেলসহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম দ্বিগুণ করার পাঁয়তারা করছে। প্রক্রিয়া চলছে আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর। চালের বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। চাতাল মালিক, মিল মালিকদের দৌরাত্ম, পরিবহনে চাঁদাবাজি দূর করতে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই। কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে জিম্মি দেশের তেল, চিনি, ডাল’র বাজার। এসব ‘খাদ্য বিধাতা’দের তোয়াজ করেই সরকার চলছে।

সরকার মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ‘বিনা ভোটের সরকার’ দেশের মানুষকে আজ ভাতে মারতে চলেছে। বক্তারা আরো বলেন, বর্তমান দুঃশাসন থেকে মুক্তির জন্য জনগণের যে বাঁচার সংগ্রাম, তা রুদ্ধ করতে সরকার দমন-পীড়ন ও ‘ভয়ের রাজত্ব’ তৈরি করে রেখেছে। রাষ্ট্রযন্ত্র ও আমলাতন্ত্রকে ব্যবহার করে দেশে দুঃশাসন চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চিরস্থায়ী করতে সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে এবং নির্বাচনব্যবস্থাকে একটি প্রহসনে পরিণত করে তা প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই বর্তমান অবস্থা অবসানের জন্য জনগণকে আজ ঘুরে দাঁড়াতে হবে। রুটি-রুজি, ভাত-কাপড়, ভোট-গণতন্ত্রের দাবিতে সংগ্রাম জোরদার করতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমাবেশ থেকে গরিব মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু, গণবণ্টন ব্যবস্থা চালু, টিসিবির কার্যক্রম জোরদার করা, ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, ‘বাফার স্টক’ গড়ে তোলা, অবৈধ ব্যবসায়ী-সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া, লুটেরা-মজুতদার-মুনাফাখোর-মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ে ও দুর্নীতি, লুটপাটের বিরুদ্ধে গণসংগ্রাম গড়ে তুলতে এবং চলমান দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে বামপন্থি শক্তিকে ক্ষমতায় আনার জন্য সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ