শোক দিবসের চেখের আলো ফিরে পেল প্রান্তিক ১৫ নারী-পুরুষ

গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

জরিনা বেগম (৫৫) ছানি জনিত অন্ধত্ব নিয়ে তারা এতদিন কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলেন। পরিবারিক ও পেশাগত কাজ তারা পুরোপুরি করতে পারতেন না। তাই দরিদ্রক্লিষ্ট এসব মানুষের অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্ট ভোগ করে আসছিলেন। শোক দিবসের সকালে তাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়েছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। ফরিদা বেগম (৬০), ধীরেন মধু (৬৫), নিখিল হালদার (৬০), এস্কেন্দার (৬৫) সহ আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ১৫ প্রান্তিক নারী-পুরুষ চোখের আলো ফিরে পেয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আশ্রায়ণ কেন্দ্রের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য বিনামূল্যে চক্ষু সেবা কার্যক্রম গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দেবগ্রাম আশ্রয়ন কেন্দ্রে থেকে শুরু করা হয়েছে।

ওই হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী বলেন, দেবগ্রাম আশ্রায়ণ প্রকল্প থেকে ১২ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য বিনামূল্যে চক্ষু সেবা কার্যক্রম শুরু করি। আমরা চক্ষু পরীক্ষা, দৃষ্টিশক্তি, রক্তচাপ, রক্তের সুগার পরীক্ষা শেষে ঔষুধ ও চশমা বিতরণ করছি। এখান থেকে ১৫ জন ছানি রোগী বছাই করেছি। ছানি রোগীদের আশ্রয়ণ কেন্দ্র থেকে হাসপাতালের গাড়িতে করে ১৩ ও ১৪ আগস্ট চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে আসি।

১৫ আগস্ট শোক দিবসে সকালে চক্ষু হাসপাতালে বিনামূল্যে তাদের ছানি অপারেশন করা হয়েছে। ফলোআপ ও কাউন্সিলিং শেষে আবার চক্ষু হাসপাতালের গাড়িতে করে তাদের মঙ্গলবার (১৬আগস্ট) আশ্রয়ণ কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হবে। এই ভাবে গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলার ৬০টি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে বিনামূল্যে চক্ষু সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির ছানি ও ডায়বেটিস জনিত অন্ধত্ব মোচন করা হবে।

দেবগ্রাম আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা ফরিদা বেগম (৬০) বলেন, আমি অত্যন্ত অসহায়, চোখে দেখতে পারতাম না। সংসারের কাজ ও চলাফেরা করতে সমস্যা হত, এতে কষ্টের কোন অন্ত ছিল না। ডাক্তার দেখানোর সামর্থ আমর নাই। চক্ষু হাসপাতালের ডাক্তাররা আমাদের আশ্রয়ণ কেন্দ্রে গিয়ে চোখ পরীক্ষা করে ছানি পায়। তারা বিনা খরচে আমাকে হাসপাতালে এনেছে। চোখের অপারেশন করে দিয়েছে। এখন আবার বাড়ি পৌঁছে দেবে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আমি চোখের আলো ফিরে পেয়েছি। এদিন আমাদের শোকের দিন। তাই চোখের আলো ফিরে পেয়ে বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

আশ্রয়ণের বাসিন্দা নিখিল হালদার (৬০) বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট দেই। তিনি আমাদের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হন। এটি আমাদের জন্য গর্বের। প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য একটি চক্ষু হাসপাতাল করে দিয়েছেন। এখানে অপারেশন করিয়ে এখন চোখে ভাল দেখতে পারব। কাজ বাজ করতে আর সমস্যা হবে না। দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হবে না। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শোক দিবসে চোখ ছানি মুক্ত হয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধু সহ ৭৫ এর ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করছি।

কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাহিদ ফেরদৌসী আশ্রয়ণ কেন্দ্রে বিনামূল্যে চক্ষু সেবা কার্যক্রম শুরু করেছেন। সেই সাথে তিনি ১৫ জনের ছানি অপারেশন করে দিয়েছেন। এগুলো মহৎ উদ্যোগ। এটি অব্যাহত থাকলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠি উপকৃত হবে।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ