দুই দিনের ব্যবধানে এক মেয়ের দুই বিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা সমালোচনা

গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

দুই দিনে ব্যবধানে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে দুই বিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রেম করে গোপনে বিয়ে করলেও এ বিয়েতে পরিবারের সম্মতি না থাকায় বিয়ের দু’দিন পর ওই মেয়েকে নিজেদের পছন্দের ছেলের সাথে জোর করে বিয়ে দিয়েছেন অধ্যক্ষ পিতা।

এদিকে প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ না করিয়ে দুই দিনের ব্যবধানে তামান্না (১৯) নামের ওই কলেজ শিক্ষার্থীকে বিয়ে দেয়ায় এলাকায় শুরু হয়েছে আলোচনা সমালোচনা।

আর এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামে। তামান্নার পিতা আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ উপজেলার গজালিয়া মহিলা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার কাশিপুর গ্রামের তাজমুল শিকদারের ছেলে ইমন শিকদারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গজালিয়া গ্রামের আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহর মেয়ে তামান্নার। প্রেমের সুবাদে গত ১১ আগস্ট পাটগাতী কাজী অফিসে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক কাজীর মাধ্যমে কলেমা পড়ে ও সরকারি রেজিস্টার খাতায় স্বাক্ষর করে বিয়ে করে দুজন।

কিন্তু বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে তামান্নার পিতা আবু জাফর ক্ষিপ্ত হয়ে ১৩ আগস্ট বিকালে কোটালীপাড়া উপজেলার চুরখুলি গ্রামের শরাফাত খানের বড় ছেলে জুয়েল খানের সাথে পূনরায় বিয়ে দেন মেয়ের।

এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। একজন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তার মেয়ের প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ না করিয়ে কিভাবে ২য় বিয়ে দেয় এমন প্রশ্ন করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একজন শিক্ষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সেই শিক্ষক বলেন, ইসলাম ধর্ম অনুসারে যদি কোন ছেলের সাথে মেয়ের কলেমা পরে ও স্বাক্ষীদের সামনে কাজী অফিসে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাহলে প্রথম স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ করিয়ে ৩ মাস ১৩ দিন পর মেয়ের বিয়ে অন্যত্র দেয়া যায়। একজন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তার মেয়ের প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ না করিয়ে কিভাবে ২য় বিয়ে দেয় তা বোধগম্য হয় না!

তামান্নার স্বামী ইমন শিকদার বলেন, আমরা ইসলামী শরীয়া মোতাবেক কলেমা পড়ে কাজির সামনে সাক্ষী রেখে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেনমোহরে দুজনে বিয়ে করি। ঘটনাটি জানার পরে মেয়ের বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে দুদিন পরে জোর করে মেয়েকে কোটালীপাড়ায় বিয়ে দেয়। বর্তমানে আমার স্ত্রী তামান্নার সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। এছাড়া ওর বাবা স্থানীয় কিছু লোকদের দিয়ে আমাকে ভয় দেখাচ্ছে এলাকায় গেলে মেরে ফেলবে। তাই আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত পেতে প্রশাসন সহ সকলের সহযোগিতা চাই।

এ বিষয়ে তামান্নার পিতা ও গজালিয়া মহিলা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কলটি কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আল মামুন বলেন, বিষয়টি আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে জানতে পারলাম। এব্যাপারে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ