প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাঁধ কেটে দেয়ার অভিযোগে থানায় মিথ্যা মামলা

শ্রীঃ মিশুক চন্দ্র ভুঁইয়া,পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ

কলাপাড়ায় ঘূর্নিঝড় ইয়াস’র প্রভাবে ইটের ভাটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে ওই ভাটার মালিক তার প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বাঁধ কেটে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে মর্মে অভিযোগ এনে ৬ জনকে আসামী করে কলাপাড়া থানায় মিথ্যা মামলা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আসামি হলেন, মোঃ আলম শিকদার, সাইফুল, সাইদ, জামাল গাজী, নিজাম গাজী, নাছিমা বেগম। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩১ মে সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, শুধু ইটের ভাটার বেড়িবাঁধ নয়, পাশাপাশি আরো অনেক বেড়িবাঁধ রয়েছে যা, ঘূর্নিঝড় ইয়াসের তান্ডবে জো’ এর প্রচন্ড আঘাতে প্রতিটি বেড়িবাধঁ জির্নসির্ন হয়েগেছে।

লস্করপুর, তাহেরপুর ও মোহন পুরের নিজাম সিকদার, নুর ইসলাম সিকদার, মনিরুল সিকদারসহ একাধিক গন্যমান্য ব্যাক্তিরা জানিয়েছেন, ঘূর্নিঝড়ের দিন পানির এতোই চাপ ছিলো, ইটের ভাটার বেড়িবাঁধ তো সামান্য মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তলিয়ে গিয়ে, বড়বেড়িবাঁধ তলিয়ে যেতে শুরু করেছিলো। কিন্তু সে সময় এলাকার সবাই মিলে বেড়িবাঁধের উপরে একত্রিত ছিলেন এবং আতঙ্কে ছিলেন। যদি ভাটার মালিকরা কাউকে দোষারোপ করে বা মামলা হামলা দেয়, তাতো প্রকাশ্যে মিথ্যা হবে।

মোহনপুর গ্রামের মৃত্যু মালেক সিকদারের পুত্র (অভিযোগকারী) আলম সিকদার জানান, ২২ নং জে এল উমেদপুর মৌজার এস এ ৩৩৯ ও ৩৮৪ নং খতিয়ানের ৬৮৮ এবং ৬৮৯ নং দাগে ০.৭৭ একর জমি রয়েছে। যা দীর্ঘ বছর ধরে চাষাবাদসহ ভোগ দখল করে আসছে। ৪/৫ বছর ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত্যু অহেদুল হাওলাদারের পুত্র মোঃ ইয়াকুব রহমান জাফর (৪০), মোস্তফাপুর গ্রামের আঃ রব হাওলাদারের পুত্র মোঃ সাইফুল ইসলাম (৩০), সামান্য কিছু রেকর্ডী জমি ক্রয় করার পর, সরকারী খাস ও বনবিভাগের বন উজার করে আরো প্রায় ৩ একর জমি দখল নিয়ে ‘কে বি এল টু’ নামের ইটের ভাটা শুরু করে। ধীরে ধীরে ওই ভাটার মালিকরা আরো কিছু স্থানীয় শক্তিশালী চক্র সংঘবদ্ধ হয়ে জোর জবর দখল নেয়াসহ বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে।

জোর-যুলুম করে ইটের ভাটার চারো দিকে যে, বেড়িবাঁধ দিয়েছে ওই বেড়িবাঁধের মধ্যে আলম সিকদারের প্রায় ১.০০ একর জমি রয়েছে। উক্ত জমি পুনরায় নিজের দখলে ফিরে পেতে ১৪৪,১৪৫ ফৌঃ কাঃ বিঃ ধারা মতে মোকাম কলাপাড়া উপজেলা বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আলতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যাহার মামলা নং-১৭৯/১৮। আলম সিকদার আরো জানান, ইটের ভাটার ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান সবুজ বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় তাদের ৬ জনকে আসামী দিয়ে মামলা করার ফলে রাত-দিন হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।

অপর দিকে ইটের ভাটায় মাটিদেয়াসহ বিভিন্ন সুবিধা গ্রহনকারী লস্করপুরের বারেক সিকদারের পুত্র সিদ্দিক, মোহনপুরের আইউবআলী সিকদারের পুত্র ইদ্রিস সিকদার, তাহেরপুরের মোন্তাজ সিকদারের পুত্র রশিদ সিকদার ও রশিদ সিকদারের পুত্র রফিক সিকদার, বাকিবুল্লাহ এবং শাকুর সিকদার তাকে বিভিন্ন সময় হুমকী দিচ্ছে।

তাকে এবং তার পরিবারের যে কেউকে যে কোনো সময় হত্যার মতো ঘটনা সৃষ্টি করতে পারে। ইটভাটার মালিক অনেক টাকা ওয়ালা, তাই টাকা ছিটালে মিথ্যা মামলা সত্যে রুপান্তরিত করা কোনো ব্যাপার নয়, এমনকি আলম সিকদার দরিদ্র বিধায় তাকে গায়েব করাও সময়ের দাবী মাত্র। এমতাবস্থায় সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক ঘটনার সঠিক তথ্য উদঘাটন আর অপরাধীদের অপশক্তির কালো থাবা থেকে বাঁচতে সংশ্লীষ্ট কর্তৃপক্ষ্য, আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার সংগঠন জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছে আলম সিকদার ও তার পরিবার।

ইটের ভাটার মালিক মোঃ ইয়াকুব রহমান জাফর এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া থানার মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এস আই নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তদন্ত শেষে মামলা এজাহার নেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের মতো তদন্ত করেছেন। তিনি তার মতো করেছেন, স্বাক্ষী প্রমাণ আছে।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ