রংপুরে কূপে আটকে থাকা অবস্থায় ৯ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার
রংপুরে কূপে আটকে থাকা অবস্থায় ৯ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার
রিয়াজুল হক সাগর,রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রংপুরের বদরগঞ্জে একটি বাড়ির কূপ খনন করতে গিয়ে বালু ধসে মাটির নিচে ২০ ফুট গভীরে এক নির্মাণশ্রমিক গলা পর্যন্ত মাটিচাপায় আটকা পড়েন।
৯ ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে তাকে মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। মাটির নিচে আটকে থাকা আবু হাসান (২৮) নামের ওই নির্মাণ শ্রমিককে সনাতন পদ্ধতিতে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি পৌর এলাকার শাহাপুর মাস্টারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
গতকাল শনিবার (২২ অক্টোবর) দুপুর তিনটার দিকে বদরগঞ্জ পৌর এলাকার বালুয়া ভাটায় সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুলের বাড়ির পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের টানা ৯ ঘণ্টা উদ্ধার অভিযানে আরো অংশ নেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, বদরগঞ্জ পৌর এলাকার বালুয়া ভাটা গ্রামের বাবুল দাসের বাড়িতে টয়লেটের কূপ খননে সকাল থেকে কাজ করছিলেন আবু হাসানসহ তিন শ্রমিক। স্থানীয় লোকজন জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে খনন করা কূপ থেকে উপরে উঠতে গিয়ে বালু ধসে আটকা পড়েন আবু হাসান। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে, ফায়ার সার্ভিস এসে উদ্ধার অভিযান চালায়।
স্থানীয়রা জানান, এ ঘটনায় সাথে থাকা তিন শ্রমিকের মধ্যে দুই শ্রমিক বাড়ি চলে যান। পরে আবু হাসানের খোঁজ পড়লে তাকে খুঁজতে থাকেন অন্য ওই দুই শ্রমিক। এদিকে প্রায় নয় ঘণ্টা মাটির নিচে গলা পর্যন্ত আটকে গিয়ে মৃত্যুর মুখে পড়েন ওই শ্রমিক।
সনাতন পদ্ধতিতে অভিযান পরিচালনা করায় উদ্ধার কার্যক্রম দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তবে আবু হাসানকে উদ্ধারে কূপের নিচে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। কূপে আটকা পড়ে থাকা শ্রমিককে নিরাপদে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে রংপুর ও বদরগঞ্জ থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করেন।
অভিযান দেখতে ঘটনাস্থলে হাজার হাজার উৎসুক মানুষ ভিড় করেন। বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রংপুর বিভাগীয় উপপরিচালক জসিম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাশপিয়া তাসরিন, রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার বাদশা মাসউদ আলম, বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান হাবিবসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জানান, ‘ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টা ও প্রশাসনের সদিচ্ছার কারণে শ্রমিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এটি একটি বড় ঘটনা ঘটতে পারতো। সবাইকে সতর্কতার সাথে কাজ করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।